নুরজাহান, ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে যার সঙ্গে দেখা। ট্রেনের টিকিটের কালোবাজারি করতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) খেয়ে ফেলতেও রাজি তিনি। টিকিট কাটতে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু যমুনা নিউজের ক্যামেরা দেখেই তা মুখের ভেতর ঢুকিয়ে ফেলেন।
অথচ, একটু আগে নুরজাহানের কথায় বোঝার উপায় ছিল না, তিনি কালোবাজারি সিন্ডিকেটের একজন। জানালেন, ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজারি সিন্ডিকেটের হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত নানা কসরত করতে হয় তাদের। দুইশ টাকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করতে সবখানে নতুন কৌশল। ছিন্নমূল কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষকে আগে থেকেই লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করছে একটি চক্র। এছাড়া অনলাইনে পঞ্চাশ শতাংশ টিকিট মুহূর্তে হাওয়া হয়ে যাওয়াকেও ডিজিটাল কালোবাজারি বলছেন সাধারণ মানুষ। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত যাত্রী।
নুরজাহান জানিয়েছেন, তাদের মতো প্রতিদিন অন্তত শতাধিক নারী-পুরুষকে টিকিটের লাইনে দাঁড় করানো হয়। টিকিট কাটার লাইনে নুরজাহানের পেছনে দেখা মেলে সিন্ডিকেটের আরেক সদস্যকেও। এছাড়া যার তত্ত্বাবধানে কাউন্টারের সামনে এই কালোবাজারি কারবার চলে, তাকেও খুঁজে পায় যমুনা নিউজ। তবে, ক্যামেরা দেখেই সটকে পড়ে সে।
এদিকে অনলাইনে টিকিট কাটতে না পেরে ক্ষোভ জানিয়েছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, শুধু কাউন্টারে নয়, অনলাইনেও ডিজিটাল কালোবাজারি করছে সহজ ডটকম। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, টিকিট নিয়ে কারসাজিতে ট্রেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত।
যদিও এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার। অন্যদিকে সহজ ডটকমের জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদের দাবি, অনলাইনেও সব চলছে ঠিকঠাকভাবেই। তিনি জানিয়েছেন, রেলের প্রযুক্তিগত কাজের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সহজের। আর কালোবাজারি ঠেকানোর দায়িত্ব রেলওয়ের।
রাজধানীর কমলাপুর ছাড়াও তেজগাঁও, বিমানবন্দর, বনানী আর ফুলবাড়িয়া স্টেশন কাউন্টার থেকে বিক্রি হচ্ছে আরও ২০টি ট্রেনের টিকিট।
/এমএন
Leave a reply