যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামির সাথে তুরিন আফরোজের গোপন বৈঠক!

|

মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে এক আসামির সাথে গোপন বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়ে যাচাই করে ব্যবস্থা নেবেন তারা। তুরিন আফরোজ যমুনা নিউজকে জানান, নিয়োগের পর থেকে তিনি যা করেছেন তা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় করেছেন।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা –এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ওয়াহিদুল হককে গ্রেফতার করা হয় ২৪ এপ্রিল। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠান ট্রাইব্যুনাল। জানা গেছে, ১১ নভেম্বর ওয়াহিদুল হকের মামলাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে। দায়িত্ব পাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর, তিনি প্রথমে টেলিফোনে ও পরে সরাসরি ওয়াহিদুল হকের সাথে মামলার বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জানান, তুরিনে আফরোজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত বুধবার (৯ মে) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

অভিযোগের ব্যাপারে তুরিন আফরোজ জানান, সব কাজই কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় করেছেন। এ বিষয়ে আমি ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিস্তারিত বলেছি।

ফেসবুকে তুরিন আফরোজ লিখেছেন-
১। আমি এখনও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদে বহাল আছি। আমাকে কেউ বরখাস্ত করেনি।

২। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ৮(২) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটারের তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার এখতিয়ার রয়েছে। সুতরাং যেকোনো মামলাতে তদন্ত করার এখতিয়ার আমার আছে। আর তদন্ত করতে গেলে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করতে হয় । সুতরাং আমি তদন্তের স্বার্থে যেকোনো প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণ করতে পারি।

৩। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমি এই পর্যন্ত প্রসিকিউটর হিসেবে যা কিছুই করেছি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন।

৪। আমাকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। যেহেতু বিষয়টি এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছেন তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। তদন্ত শেষ হলে আমি আমার বক্তব্য সর্ব সম্মুখে প্রকাশ করবো। আশা করি সেই পর্যন্ত আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমালোচকগণ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন।

জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের সব ধরনের মামলা থেকে বিরত রাখা হয়েছে তুরিন আফরোজকে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয়ের। এটা যদি সত্যি হয় তবে মন্ত্রণালয় অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে।

অভিযোগের ফাইল পাওয়ার কথা যমুনা নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বলেছেন, এমন একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা নিশ্চিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য প্রসিকিউটর হিসেবে ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজকে নিয়োগ দেয়া হয় ২০১৩ সালে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বিধি মোতাবেক বরখাস্ত করা হতে পারে। আইনি পদক্ষেপও নিতে পারে সরকার।

যমুনা অনলাইন: টিএফ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply