মোবাইলে অপারেটর টু অপারেটর বা বিদেশে কলের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকা পায় মধ্যস্থ প্রতিষ্ঠান। অংকের হিসাবে যা প্রায় ১৭ শতাংশ। ফলে গ্রাহককে বছরে বাড়তি গুনতে হয় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। অথচ এমন প্রতিষ্ঠানের কোনো দরকারই নেই। তাই নড়ে চড়ে বসেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বিটিআরসি। এসব আইসিএক্স অপারেটরদের কার্যক্রম বন্ধে সংশোধন হচ্ছে নীতিমালা।
মোবাইল গ্রাহক ও অপারেটরের মাঝে আরও কিছু কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করে লাইসেন্স দেয়া হয় ২০০৮ সালে। এক অপারেটর থেকে আরেক অপারেটরে কল যায় আইসিএক্স হয়ে। এজন্য টাকা পায় ২৬টি আইসিএক্স অপারেটর। অথচ দুই অপারেটরের মধ্যে সরাসরি কল করার অবকাঠামো আছে।
বিদেশ থেকেও মোবাইল অপারেটরের কাছে সরাসরি কল আসছে না। প্রথমে রিসিভ করছে আইজিডব্লিউ অপারেটর। এরপর মোবাইল অপারেটর হয়ে কল যাচ্ছে গ্রাহকের কাছে। এরকম ২৫টি আইজিডব্লিউ অপারেটর জন্য বাড়তি টাকা দিতে হয় গ্রাহককে। এক হিসাবে দেখা যায়, গ্রাহকের প্রতি একশো টাকার মধ্যে ১৭ টাকাই যায় এসব প্রতিষ্ঠানের পকেটে। বছরে যার পরিমাণ পায় ২ হাজার ৫০ কোটি টাকা। অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর, বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ফরহাদ হোসেন বলছেন, বিশ্বের কোথাও এমন নজির নেই। আমাদের অপারেটরদের খরচ বাড়ার ফলে গ্রাহকেরও খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অথচ অপারেটরগুলো নিজেরাই এসব সেবা দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম।
আর অপারেটর রবির চিফ কর্পোরেট রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স মো. শাহেদ আলম মনে করছেন, মাঝখানে একটি পক্ষকে ক্রিয়াশীল রাখা স্বচ্ছতার অভাব। যদি ভোক্তা ও অপারেটরদের মধ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষ না থাকে তাহলে ভোক্তারা এর ইতিবাচক সুবিধা পাবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলছেন, অবকাঠামো খাতে অপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রাহকের বাড়তি টাকা খরচের পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে সেবার মান। এর ফলে নতুন করে লাইসেন্সিং সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা করছেন তারা।
সেবার মান বাড়ানো এবং খরচ কমাতে সমন্বিত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছে টেলিকম নেটওয়ার্ক পলিসি। খসড়া অনুযায়ী, অবকাঠামো, বেতার পরিসেবা এবং তারযুক্ত পরিষেবা, এই তিন ধরনের লাইসেন্স চালুর ইঙ্গিতও দিলেন তিনি।
/এডব্লিউ
Leave a reply