যুক্তরাষ্ট্রে অবাধে অস্ত্র বহন বন্ধের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বার্ষিক সম্মেলন করেছে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ)। অস্ত্র অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির এমন কাণ্ডে বাইডেন প্রশাসনও ক্ষুব্ধ। সম্মেলনটির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মার্কিনিরা। তাদের অভিযোগ উঠে এসেছিল প্ল্যাকার্ডে; সেখানে লেখা ছিল, হাতে রক্ত মেখে সম্মেলন করছে এনআরএ।
যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বন্দুক হামলার ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ বাসিন্দাদের মাঝে। কয়েকদিনের ব্যবধানে টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক এবং বাফেলোতে হামলার ঘটনায় আতঙ্ক সবার চোখেমুখে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে অনেকে রাস্তায়ও নেমেছেন। এমনই এক ক্ষুব্ধ মার্কিনি বলেন, একজন লোক অস্ত্র হাতে স্কুলে কীভাবে ঢোকে? মেটাল ডিটেক্টর কোথায় ছিল? নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল?
ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বেকি প্রিঙ্গেল বলেন, আমাদের বাচ্চারা মারা যাচ্ছে। মাত্রই আমরা ১৯টি শিশুকে হারালাম। নীতি নির্ধারকদের কাছে প্রশ্ন, নিজেদের স্বার্থের জন্য আর কতকাল শিশুদের বলি করা হবে?
অস্ত্র ক্রয় ও বহনের বিরুদ্ধে যখন ফুঁসে উঠেছে মার্কিনিরা, তখনো নির্বিকার অস্ত্র অধিকারের পক্ষে কাজ করা সংগঠন ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ)। টেক্সাসের ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৩০০ মাইল দূরে শুক্রবার (২৭ মে) বার্ষিক সম্মেলন করে সংগঠনটি। নিরপরাধ শিশুদের হত্যাকাণ্ডের চার দিনের মাথায় এমন আয়োজনকে বেহায়াপনার সাথে তুলনা করেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। এমনকি দেশজুড়ে সমালোচনার মধ্যেও নিজেদের অবস্থানে অনড় এনআরএ। সংস্থাটি দাবি করে, সমাজে ঘটা অপরাধের জন্য অস্ত্র বহনকে দায়ী করার সুযোগ নেই। পরিবর্তন আনতে হবে মানুষের অপরাধমূলক চিন্তা ভাবনায়।
এনআরএ’র সিইও ওয়েন ল্যাপিয়ের বলেন, প্রতিটি মানুষ তার কর্মের জন্য দায়বদ্ধ। একজন বিকৃত মস্তিস্কের মানুষ গোটা সমাজকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। তার মানে এই জন্য যে, এর জন্য আইন দায়ী। এই অধিকার রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা। কারণ, যে কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষায় অস্ত্র বহন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে সাহায্য করার আগে নিজেদের স্কুলের নিরাপত্তা বাড়াতে বললেন ট্রাম্প
অবশ্য, এনআরএ’র ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বাইডেন প্রশাসনও। হোয়াইট হাউজ বলছে, ভয়াবহ এসব বন্দুক হামলার দায় এড়াতে পারে না ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন। কারণ, তাদের কারণেই বারবার ভেস্তে যাচ্ছে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কারিন জিন-পিয়ের বলেন, আমেরিকায় জনসংখ্যার চেয়ে অস্ত্র বেশি। যদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় অস্ত্রের এতোই প্রয়োজন হতো, তাহলে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ রাষ্ট্র হতো আমাদের দেশ। কিন্তু আমরা তা নই। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কার্যকরে প্রেসিডেন্টের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। বন্দুক হামলা বন্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছি।
গেলো মঙ্গলবার ১৮ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী রব এলিমেন্টারি স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে। পরে পুলিশের গুলিতে বন্দুকধারী নিজেও নিহত হয়। ওই ঘটনায় নিহত ২১ জনের মধ্যে ১৯ জনই শিশু।
আরও পড়ুন: টেক্সাসে হামলা: মৃত সহপাঠীদের রক্ত মেখে মরার ভান করেই প্রাণ রক্ষা সেরিলোর
/এম ই
Leave a reply