হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মজুদ সম্পর্কে জানতো না বিস্ফোরক পরিদফতর

|

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ঘটে গেছে দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনা। শনিবার রাত আনুমানিক ১০টা দিকে আগুনের সূত্রপাত। কনটেইনার ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের ভয়াবহ বিস্ফোরণে আশপাশের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। তবে সেখানে দাহ্য রাসায়নিক হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মজুদ সম্পর্কে জানতো না সরকারের বিস্ফোরক পরিদফতর।

বিস্ফোরক পরিদফতরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই রাসায়নিক মজুদের ব্যাপারে ডিপো কর্তৃপক্ষ কোনো লাইসেন্স নেয়নি এবং পরিদফতরকে এ সম্পর্কে কোনো কিছু অবহিতও করেনি। মজুদকৃত হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি দাহ্য রাসায়নিক যৌগ। একে উত্তপ্ত করা হলে তাপীয় বিয়োজনের ফলে বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে হাইড্রোজেন পারক্সাইড। এরকম বিপজ্জনক পণ্য নিরাপদে সংরক্ষণ ও পরিবহনের ব্যাপারে রয়েছে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেছেন, কন্টেইনার ডিপোতে মজুদকৃত রাসায়নিকের ব্যাপারে তাদেরও কিছু জানানো হয়নি। জানানো হলে আগুন নেভানোর জন্য নেয়া যেত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম বিস্ফোরক পরিদফতরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, লোকালয় বেষ্টিত এ জায়গায় এত বেশি দাহ্য বা বিপজ্জনক পণ্য মজুদ করার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরও জানান, এ ধরনের পণ্য সংরক্ষণ করার জন্য বিশেষ অবকাঠামোর দরকার হয়। এমন বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য সেখানে সংরক্ষণ করা হলেও জানানো হয়নি বিস্ফোরক পরিদফতরকে। নেয়া হয়নি কোন লাইসেন্স কিংবা অনুমোদন। লোকালয় বেষ্টিত জায়গায় বিপজ্জনক পণ্য মজুদের কোনো আইনি সুযোগ নেই। পাশাপাশি, এ ধরনের দাহ্য রাসায়নিক সংরক্ষণের জন্য বিশেষ অবকাঠামোর দরকার হয়, যাতে প্রয়োজন অনুসারে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হয় যে, এর আশপাশে কোনো লোকালয় নেই।

তবে বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিক মুজিবুর রহমান দাবি করেছেন, বিস্ফোরক পরিদফতরের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়েছেন তিনি। সেই সাথে তিনি দাবি করেন, অতিরিক্ত গরমের কারণেই ঘটেছে এই বিস্ফোরণ।

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের আদ্যোপান্ত

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply