কর সুবিধা যাদের দেয়া হয় তা শিল্পের জন্য সহায়ক নয়, বাজেট নিয়ে এফবিসিসিআই

|

বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই।

যারা কর সুবিধা চান তারা পান না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই যাদের সুবিধা দেয়া হয় তা শিল্পের জন্য সহায়ক হয় না। এমন অভিযোগ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য না। ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকা করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, ব্যাংক খাত থেকে ঢালাও ঋণ নিলে সংকুচিত হবে বেসরকারি উদ্যোগ। অগ্রিম আয়কর কেটে নেয়ার ধারা পাল্টানোর আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, করোনা টেস্ট কিটে করারোপ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার একদিন পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। কালো টাকা ফিরিয়ে আনা, সার্বিক কর কাঠামো, ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক ঋণ, স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসহ সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে নানান প্রসঙ্গ। গণমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব এফবিসিসিআই নৈতিকভাবে সমর্থন করে কিনা। এর জবাবে এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, এই প্রস্তাব সমর্থন করে না এফবিসিসিআই। কারণ, তাহলে তো মানুষ এই কাজে উৎসাহিত হবে। আমি এখন ২৭% বা ৩০% দেই না কেন, ওখান থেকে ফেরত আনতে পারলে তো ৭% হয়ে যাবে।

ব্যবসায় সুবিধা দেবার ক্ষেত্রে নানান অসঙ্গতি তুলে ধরে এফবিসিসিআই। বলা হয়, সুবিধা না চাইতেই কেউ কেউ পায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্থানীয় উদ্যোগ। এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে ল্যাপটপ হয়তো ২-১ জন বানায়। কিন্তু তার মান ও সক্ষমতা আমরা ভালো করেই জানি। তাহলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আমরা কার জন্য দিলাম? কীসের জন্য দিলাম? এরকম বিচ্যুতির অসংখ্য ঘটনা আছে আমাদের সিস্টেমে; যিনি চেয়েছেন তিনি পাননি। এরকম অনেক ছোট ছোট কোম্পানি শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে ১-২% সুযোগ দিচ্ছি না, অথচ অনেক বড় বড় জিনিসে কীভাবে সাহায্য দেয়া হয়, তা কে চেয়েছেন কীভাবে পেয়েছেন কেউ জানে না।

মূল্যস্ফীতি এখন উর্ধ্বমুখী। দামের উত্তাপ পেতে ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো উচিৎ ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। এই সভায় বলা হয়, অগ্রিম আয়কর নেয়া হচ্ছে যা সমর্থনযোগ্য নয়। এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আয়করের সীমানা বৃদ্ধি করা হয়নি। আমি মনে করি বর্তমান যে বাজারমূল্য, মূল্যস্ফীতির কারণে এটি করা খুবই দরকার ছিল।

বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ লক্ষ্য ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে বেসরকারি উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে করোনা টেস্ট কিট, পিপিপিসহ এসব পণ্য উৎপাদন এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট আরোপ ঠিক হয়নি বলে জানানো হয়। জসিম উদ্দিন বলেন, এসির ওপর কিন্তু মূসক নাই। আর টেস্ট কিটের ওপর মুসক বসিয়ে দিলেন! এসব কিট, পিপিপি তো আমাদের জীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: ‘আমরা চলতে পারছি না, তেল কিনে খেতে পারছি না’

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply