ইউরোপের নিয়ন্ত্রণহীন দাবানল ও তাপদাহে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

|

ইউরোপে নিয়ন্ত্রণহীন দাবানলে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারের বেশি মানুষ। সোমবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত পর্তুগালে ৬৫৯ ও স্পেনে ৩৬০ জনের মৃত্যু লিপিবদ্ধ করা হয়। দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রচণ্ড তাপদাহে হিটস্ট্রোক-পানিশূন্যতার কারণে বাড়ছে প্রাণহানি। ফ্রান্স-স্পেন ও গ্রিসে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা থেকে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। ব্রিটেন ছাড়াও ইউরোপীয় দেশগুলোতে সোমবারই ৪১ থেকে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের খবর জানাচ্ছে, দক্ষিণ ইউরোপের দেশ পতুর্গালে অনুভূত হচ্ছে রেকর্ড ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। তীব্র দাবদাহে এক সপ্তাহেই দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে ৬শর বেশি মানুষ। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, তাদের বেশিরভাগই প্রবীণ বাসিন্দা। ৭৫ হাজার একর অঞ্চল পুড়ে যাওয়ায় বসতভিটা রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছেন পর্তুগিজরা।

প্রতিবেশী স্পেনও তীব্র দাবানলে নাকাল। পার্বত্য এলাকায় দমকলকর্মীসহ সাড়ে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির মাইজাস হিলস থেকে সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে ৭টি নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরানো হয়েছে। পর্যটন নগরী মালাগা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে আগুনের লেলিহান শিখা।

ফ্রান্সে ২২টি অঞ্চলে জারি করা হয়েছে পরিবেশ বিষয়ক সতর্কতা অরেঞ্জ অ্যালার্ট। এর মধ্যে ধ্বংস হয়েছে ২৬ হাজার একর বনভূমি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে সরানো হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে।

প্রধান ফ্রান্সের ফায়ার ব্রিগেড কর্মকর্তা মার্ক মারমুলেঁ বলছেন, শুধু লা তাস্তে শহরের তিন হাজার ৭০০ হেক্টর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। গেলো ২৪ ঘণ্টায় আগুন কিছুটা কমানো গেছে। তবে পরিস্থিতি শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। লান্দিরাস এলাকার দাবানল নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ব্রিটেনে ১৩৮ বছরের দাবদাহের ইতিহাসে উষ্ণতম বছরগুলোর তালিকায় ওপরের দিকে ২০২২ সাল। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সোমবার অনুভূত হচ্ছে রেকর্ড ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সামনের সপ্তাহ নাগাদ সেটি আরও বাড়তে পারে বলেও ধারণা তাদের।

যুক্তরাজ্যের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ হান্নাহ ক্লক বলছেন, দুপুরবেলা দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণ পানি ও শরবত পানের পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যবিদরা। ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় সমস্যা বেশিরভাগ ঘরবাড়িতে নেই এসি। কারণ, বছরের অধিকাংশ সময় আমরা ফায়ারপ্লেস ব্যবহার করি।

রোববার নাগাদ গ্রিসের নতুন কিছু এলাকায় ছড়িয়েছে দাবানলের ভয়াবহতা। ক্রিট দ্বীপ, মরক্কো, ক্রোয়েশিয়াতেও জারি হয়েছে জরুরি স্বাস্থ্য সতকর্তা। কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply