রাজধানীতে অবৈধ মদ ও বিয়ারে সয়লাব অভিজাত বার-ক্লাব ও হোটেল; চলছে রমরমা ব্যবসা

|

ফাইল ছবি

অবৈধ মদ-বিয়ারে সয়লাব রাজধানীর অভিজাত ক্লাব, বার ও পাঁচতারকা হোটেলগুলো। প্রকাশ্যে রমরমা ব্যবসা চলছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা এসব মদ-বিয়ারের। সেখানে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে উঠতি কিশোর-তরুণদেরও। কিন্তু রহস্যজনক কারণে অনেকটাই নীরব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রাত প্রায় ১২টা। উত্তরার নামকরা মদের বার কিংফিশারের সামনে পুলিশের মতো হুইসেল/ সাইরেন বাজিয়ে হাজির হলো দুটি বিলাসবহুল জিপ। বেশ কিছুক্ষণ চলতে থাকে বিরক্তিকর একটানা সাইরেনের শব্দ। সাইরেন শুনে চাহিদামতো মদের বোতল নিয়ে হাজির হয় বারের লোকজন। এরপর প্রায় আধঘণ্টা সড়কের উপরই চলে উৎসব। বারের ভেতরেও দেখা গেলো উঠতি বয়সী কিশোরদের বিদেশি মদের জম্পেস আড্ডা। রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান বনানীতেও দেখা গেছে প্রায় একই চিত্র। মধ্যরাতেও দেখা গেছে বিদেশি মদের জমজমাট আড্ডা

কীভাবে আসে এসব মদ? তা অনেকটাই পরিস্কার হয়ে গেছে- গত এক সপ্তাহে কয়েক কন্টেইনার মদ জব্দের পর।

এ ব্যাপারে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শুধুমাত্র রাজস্ব ফাঁকি দিতে অভিনব পদ্ধতিতে তারা বিদেশ থেকে আমদানি করা মদ বের করেছে পোর্ট থেকে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আনা এসব মদ তারা রাজধানীর বিভিন্ন স্বনামধন্য হোটেল, বার ও ক্লাবগুলোতে দেয়।

মুন্সীগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান পিতা পুত্রের ক্রেতার তালিকায় প্রভাবশালীদের নাম দেখে হতবাক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কড়া নিরাপত্তার ফাঁকফোকর গলিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে চলছে রমরমা ব্যবসা।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, আমাদের অভিযানের পর ৩টি কন্টেইনার উদ্ধার হয়েছে যেখানে অবৈধভাবে আনা মদের বোতল ছিল। দেখুন, পোর্টে যথাযথভাবে যদি স্ক্যান করা হয় তাহলে কিন্তু শনাক্ত করা যায় যে কন্টেইনারে কী আছে। স্ক্যানিং ছাড়া যে জিনিসগুলো পোর্ট থেকে বের হচ্ছে এক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কারো না কারো সংশ্লিষ্টতা আছে।

বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ব্যবসায় কাস্টমসের কারা কারা জড়িত সেটাও অনুসন্ধানে নেমেছে তদন্ত কমিটি।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুলতান মাহমুদ বলেন, এখানে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে সুতা বা অন্যান্য মেশিনারিজের দাম দেখানো হয়েছে খুবই সামান্য। এই টাকাটা ধরুণ যে এলসির মাধ্যমে গিয়েছে, কিন্তু আমরা জানি যে এই মদের দাম অনেক বেশি, তাহলে বাকি টাকা কীভাবে গেলো? বাকি টাকাগুলো নিশ্চয়ই প্রপার ওয়েতে যায়নি, নিশ্চয়ই হুন্ডি বা অন্যকোনো উপায়ে গেছে। তারমানে এক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

গোয়েন্দারা বলছেন, খালাসের অপেক্ষায় থাকা কন্টেইনার যথাযথ স্ক্যান ও তল্লাশি করলে মিলতে পারে আরও অবৈধ মদের খনি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply