কিশোরগঞ্জে স্কুলছাত্র তারেক হত্যা মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পরিবার

|

নিহত স্কুলছাত্র তারেক।

কিশোরগঞ্জের নিকলীতে স্কুলছাত্র তারেক হত্যা মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পরিবারের সদস্যরা। মামলার এক আসামি থানা হেফাজতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সেই ভিডিও আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা জমা দেননি বলে অভিযোগ করছেন নিহতের বাবা। আসামিদের কেউ পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয়ায় এবং সুরতহাল প্রতিবেদনে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা বলা হলেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পরিবারটি।

২০১৪ সালে কটিয়াদী উপজেলার মাহমুদ গ্রামের একটি ডোবা থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র তারেকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে সময় সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও গলায় কালো দাগ ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার কাজ শেষ হয়নি। এখন ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পরিবারটি।

নিহত তারেকের বাবা আব্দুস সাত্তার জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিল হেলাল নামে এক আসামি। তার স্বীকারোক্তির ভিডিও ধারণ করে পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, সেই ভিডিও আদালতে জমা দেননি তদন্ত কর্মকর্তা। আসামিরা কেউ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয়ায় ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে এখন শঙ্কায় ভুক্তভোগী পরিবার।

থানা হেফাজতে হেলালের স্বীকারোক্তির সেই ভিডিও এখন ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, সেই ভিডিওতে হেলাল স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হলো আব্দুল মতিন। যিনি মামলার বাদী আব্দুস সাত্তারের বাবার পালক সন্তান। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তারেককে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের বাবাকে দিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনকে আসামি করে মামলাও করান মতিন।

তদন্ত শেষে মতিনসহ ৮ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণও শেষ হয়েছে। থানা হেফাজতে হেলালের স্বীকারোক্তির ভিডিও আদালতে জমা দিয়েছিলেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এখন মনে করতে পারেছেন না বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান।

এদিকে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চিকিৎসক নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন। মৃত্যুর কারণও নির্ণয় করা যায়নি। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আসামিপক্ষের প্রভাবের কারণে এমন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন চিকিৎসক।

বলছেন, আসামির স্বীকারোক্তির ভিডিওটি বিচারকাজে সহায়ক হতে পারে বলে জানান পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ ইমাম। তিনি বলেন, মামলার স্বার্থেই স্বীকারোক্তিটি ধারণ করা হয়েছিল। তবে অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবেও ত্রুটি হয়। ত্রুটিটি অনিচ্ছাকৃত হলে আমরা সংশোধনের চেষ্টা করবো।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply