বাংলাদেশের সাথে অবিচ্ছিন্ন এক নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। তবে ১৫ আগস্ট বাঙ্গালির কালো এক অধ্যায়, শোকের এক মহাকাব্য! বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন, দেশপ্রেম কিংবা আত্মত্যাগ নানা সময় উঠে এসেছে আমাদের সিনেমায়। তাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে অনেক সিনেমা! বাংলা সিনেমার প্রতি ছিলো তার সুদৃষ্টি। নিজ হাতে তিনি গড়েছেন বিএফডিসি, অভিনয়ও করেছেন একটি সিনেমায়।
বাংলা, বাঙালি কিংবা বাংলাদেশের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা অনুভূতির শিরোনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ক্যালেন্ডারের পাতায় আগস্ট এসে জানান দেয় শোকের। রচনা করে বিষাদময় দিনলিপি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাঙালি হারায় তার তার জাতির জনককে, শোকে বিহ্বল হয় পুরো জাতি।
বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের মহাকাব্যিক আখ্যান নানা সময় জীবন্ত হয়ে উঠেছে রূপালি পর্দায়। তবে কয়েক বছর ধরে আলোচনায় ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ নামের সিনেমাটি। এতে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ, নুসরাত, ইমরোজ তিশা, নুসরাত ফারিয়াসহ আরও অনেকে।
২০১৯ সালে শুরু হয় সিনেমাটির কাজ। অবশেষে সিনেমাটি দাঁড়িয়ে মুক্তির দারপ্রান্তে। তবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক এ সিনেমা কবে মুক্তির আলোর মুখ দেখবে নিশ্চিত নয় এখনও। জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার এ সিনেমার মুক্তি অনেকটাই নির্ভর করছে পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ওপর।
বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু থেকে দাফনের বিষাদময় ৩৬ ঘণ্টার গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘৫৭০’। এতে অভিনয় করেছেন মাসুম আজিজ, বাপ্পি চৌধুরী প্রমুখ অভিনেতা। চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন আশরাফ শিশির। সিনেমাটিও রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়।
এ প্রসঙ্গে সিনেমাটির পরিচালক আশরাফ শিশির বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলো তখন আমরা নতুন নতুন তথ্য পেতে শুরু করলাম। পুরো বিষয়টা যকঝন চলচ্চিত্রে চলে আসছে তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আসলে কী ঘটেছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।
বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’-এর একটি অংশের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে সিনেমা চিরঞ্জীব মুজিব। যেখানে উঠে এসেছে তাঁর জীবনের নানা দিক। ২০২১ সালের শেষ দিনে মুক্তি পায় সিনেমাটি। পরিচালনা করেছেন নজরুল ইসলাম। এ সিনেমায় বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আহমেদ রুবেল।
এ সিনেমায় অভিনয় করার অভিজ্ঞতা জানিয়ে অভিনেতা আহমেদ রুবেল বলেন, তাঁর চরিত্রের বহুমাত্রিকতা সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি তার বইটা পড়ে। বইটা পড়ে আমার মনে হয়েছে যে অভিনয় করে ওঁনার চরিত্রের যে বহুমাত্রিকতা তাকে পুরোপুরি ধারণ করা সম্ভব না। উনি একজন কিংবদন্তী।
এগুলো ছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে আরও কয়েকটি সিনেমা। তবে বঙ্গবন্ধু নিজেও অভিনয় করেছেন সিনেমায়। ‘সংগ্রাম’ নামের সেই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন প্রয়াত নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা ‘সংগ্রাম’এ ছোট একটি ভূমিকায় রুপালি পর্দায় এসেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। চিত্রনায়ক কামরুল আলম খান খসরু ও চাষি নজরুল ইসলামের অনুরোধেই ওই সিনেমার শেষ দৃশ্যে অভিনয় করেন বঙ্গবন্ধু। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে।
বঙ্গবন্ধু অভিনীত সিনেমা কিংবা তাঁকে নিয়ে নির্মিত সিনেমাগুলো কেবল সিনেমাই নয় এ এক অন্য বোধের শিরোনাম। যে শিরোনামে জড়িয়ে আছে দেশপ্রেম আর আত্মত্যাগের অজ্রস কথাকাব্য।
/এসএইচ
Leave a reply