মাত্র ১০ সেকেন্ডেই তালা খুলে চুরি হচ্ছে আস্ত প্রাইভেটকার, গ্রেফতার ৪

|

মাত্র দশ সেকেন্ডেই তালা খুলে চুরি হচ্ছে আস্ত প্রাইভেটকার। তাও আবার দিনে-দুপুরে। কোনো আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে নয়। পুরনো কৌশলেই মুহূর্তেই গাড়ি হাওয়া করে দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। ঢাকায় এমন অভিযোগে কয়েকটি মামলার পর ৪ জনের একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইদুল চলতি মাসের ১৩ তারিখে তেজগাও শিল্পাঞ্চল এলাকায় গাড়ি পার্কিং করে অফিসে ঢোকেন। এরপর সেখানে এসে দাঁড়ান লাল গেঞ্জিপরা এক যুবক। ফোনে কথা বলার ভঙ্গি ধরে আশপাশের অবস্থা দেখতে থাকে। ফুটপাতে কাউকে আসতে যেতে না দেখেই শুরু হয় তার মিশন। নির্দিষ্ট গাড়ির চালকের দরজা বরাবর গিয়ে চাপ দিয়ে গ্লাস ভেঙে দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে। কাছে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে দেয়া হয় স্টার্ট। মুহূর্তেই হাওয়া প্রাইভেটকার নিয়ে। লালগেঞ্জি পরা ওই যুবকের নাম পারভেজ।

পারভেজের আরেক সঙ্গী কামাল। এরা দুজনেই চক্রের হোতা। একসময় এরা ছিল পরিবহন শ্রমিক। বিভিন্ন গ্যারেজ মালিকদের প্রলোভনে এই পথে নামে তারা। কারওয়ানবাজার ও উত্তরা এলাকার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে মাস্টার চাবি সংগ্রহ করে। মূলত আগের মডেল বা টয়োটা নাইনটি, নাইনটি-ফাইভ এবং হান্ড্রেড মডেলের গাড়ি চুরি করে তারা।

এসব ঘটনায় রাজধানীতে বেশ কয়েকটি মামলার পর তদন্তে নামে ডিবির গুলশান বিভাগ। গোয়েন্দারা বলছেন, চুরির পর গ্যারেজে দালাল বা সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি হয় গাড়িটি। এরপর চক্রের নাজমুল, সুমন বা অন্যরা পার্টস আলাদা করে দোকানে দোকানে বিক্রি করে। শুধু তাই নয়, ইঞ্জিন, রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের ভূয়া কাগজপত্র করে বিক্রি করে তারা।

ডিএমপির ডিবি শাখার অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় তাদের পরিচয় হয় বিভিন্ন গ্যারেজে। সেখান থেকেই গাড়ির ব্যাটারি চুরি, নকল চাবি তৈরি করে হুন্ডা বা প্রাইভেটকার চুরি করা শুরু করে এই চোরচক্র।

অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, তারা মূলত বেশ কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। কেউ চুরি করে, কেউ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির কাজে নিয়োজিত থাকে।

তেজগাঁও থেকে চুরি যাওয়া গাড়িটি ছাড়াও ধানমন্ডি, গাজীপুর এলাকা থেকে এই চক্রের চুরি করা আরও চারটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply