অ্যান্ড্রয়েড ফোন দ্রুত চার্জ করার ১০ উপায় জেনে নিন

|

ফোন যদি ধীরে চার্জ হয় তাহলে বিরক্তির সীমা থাকে না। আবার অনেকের ফোন দিনে দুই বার চার্জ দেয়া দরকার হয়। যদি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায় তখন আর বিরক্তির শেষ থাকে না। এখন যদিও বেশিরভাগ ফোনে ইউএসবি-সি পোর্ট দিয়ে চার্জ করতে তুলনামূলক কম সময় লাগছে, তবুও কাজের মাঝে ফোন চার্জে লাগিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা সুখকর হয় না। কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করলে অনেক দ্রুত অ্যান্ড্রয়েড ফোন চার্জ করা যায়।

১. চার্জিংয়ের সময় ফোন বন্ধ রাখুন

আপনার ফোনটি চার্জ করার সময় বন্ধ থাকলে অনেক দ্রুত ব্যাটারি চার্জ হবে। এক্ষেত্রে চার্জিংয়ের সময় ব্যাটারি থেকে কোনো চার্জ ক্ষয় হবে না। তবে অবশ্যই চার্জ করার সময় ফোন বন্ধ রাখার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। তবে আপনি যদি বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ফোনটিকে দ্রুত ১৫ মিনিটের একটি বুস্ট দিতে চান তবে সেক্ষেত্রে এটিকে বন্ধ করা অবশ্যই একটি ভালো উপায়।

২. এয়ারপ্লেন মোড অন করুন

আপনার ব্যাটারির চার্জ কমার বড় একটি কারণ হলো নেটওয়ার্ক সিগন্যাল। সিগন্যাল যত খারাপ হবে, আপনার ব্যাটারির চার্জ তত দ্রুত শেষ হবে। ফোন চার্জ করার সময় দুর্বল সিগন্যালে ব্যাটারির শক্তি অপচয় হয়। এর সমাধান হলো চার্জে প্লাগ ইন করার আগে আপনার ফোনটিকে এয়ারপ্লেন মোডে রাখা। পরীক্ষায় দেখা যায় যে এটি সম্পূর্ণ চার্জের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের পরিমাণ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে।

৩. ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপ এবং ফিচার বন্ধ রাখুন

ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ ব্যবহার না করলেও ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যবহার করে। সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অ্যাপের মাধ্যমেও একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি সাধারণত ধীরগতিতে চার্জ হতে পারে। তাই এই ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ্লিকেশানগুলি বন্ধ করে চার্জিংয়ের গতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারেন। অ্যাপ সেটিংসে গিয়ে আপনি চাইলে এগুলো বন্ধ করে নিতে পারেন।

৪. চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার না করা

চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার করবেন ন। এ সময় ফোন ব্যবহার করলে তা চার্জিংয়ের গতি ধীর করে দেয়। বিশেষ করে, গেমের মতো ভারি অ্যাপ ব্যবহার করলে ফোন গরম হয়ে উঠবে, চার্জিং প্রক্রিয়া ধীর হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যাটারির ক্ষতি করবে।

৫. চার্জ মোড চালু আছে কিনা তা নিশ্চিত করা

আপনি যখন আপনার ফোনে একটি ইউএসবি ক্যাবল প্লাগ ইন করেন তখন আপনি কোন ধরনের সংযোগ চান তা আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস আপনাকে নির্দিষ্ট করার অপশন দেয়। আপনি যদি ল্যাপটপ বা অন্য কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে চার্জ করেন তাহলে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে চার্জিং ফিচারটি চালু আছে কিনা।

৬. ওয়াল সকেট ব্যবহার করুন

কম্পিউটার কিংবা গাড়িতে ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করে চার্জ করলে চার্জিংয়ের কর্মদক্ষতা অনেক কম এবং গতি ধীর হয়। অন্যদিকে ওয়াল সকেট চার্জিং সাধারণত আপনার ডিভাইসের ওপর নির্ভর করে ১ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত পাওয়ার আউটপুট দিতে পারে। কম অ্যাম্পেরেজে চার্জিং খারাপ না বরং এটি আপনার ডিভাইসের ক্ষতি করবে না। কিন্তু আপনাকে এটি বেশ দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করাবে। তাই অতিরিক্ত একটু চার্জের জন্য শুধুমাত্র আপনার গাড়ি বা ল্যাপটপ ব্যবহার করুন, সম্পূর্ণ ব্যাটারি চার্জের জন্য নয়।

৭. পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করুন

চলার মাঝে আপনার ফোন রিচার্জ করার প্রয়োজন হলে উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি প্রায়ই সারাদিন বাইরে থাকেন তাহলে একটি পাওয়ার ব্যাংক হতে পারে জীবন রক্ষাকারী ডিভাইস। অনেক পাওয়ার ব্যাংক ওয়াল সকেটের মতো একই অ্যাম্পেরেজ আউটপুট দেয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও বেশিও দেয়। কিন্তু যখন আপনার ফোন ২-অ্যাম্প আউটপুট দিয়ে দ্রুত চার্জ হতে পারে তখন একটি বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন। আপনাকে তখন নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার ইউএসবি ক্যাবলটি এই অতিরিক্ত শক্তি পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখে কিনা।

৮. ওয়্যারলেস চার্জিং এড়িয়ে চলুন

যদি চার্জিং গতি অগ্রাধিকার হয়, তাহলে ওয়্যারলেস চার্জিং এড়ানো উচিত। তারের চেয়ে ধীরে চার্জ হয় তারবিহীন ব্যবস্থায়। পরীক্ষায় দেখা যায় যে এটি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ধীর হতে পারে।

৯. ফোনের কেস খুলে ফেলুন

বর্তমানে প্রায় সব ফোনেই লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার হয়। এই ধরনের ব্যাটারি ঠান্ডা থাকলে দ্রুত চার্জ হয়। ৫ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চার্জিংয়ের জন্য উপযুক্ত। ফোন বেশি গরম হয়ে গেলে কেস খুলে ফেলতে হবে।

১০. ভালো মানের ক্যাবল ব্যবহার করুন

ক্যাবলের মান চার্জিংয়ের গতিতে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। চার্জিং ক্যাবলের ভিতরে চারটি পৃথক তার আছে- লাল, সবুজ, সাদা এবং কালো। সাদা এবং সবুজ তার ডেটা স্থানান্তরের জন্য, লাল এবং কালো বিদ্যুৎ পরিবহন করে। একটি স্ট্যান্ডার্ড ২৮-গেজ তার প্রায় ০ দশমিক ৫ অ্যাম্পস বহন করতে পারে; অন্যদিকে একটি বড় ২৪-গেজ তার ২ অ্যাম্পস বহন করতে পারে।
তথ্যসূত্র: মেক ইউজ অফ, গেজেটস নাও
ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply