ফরিদপুর প্রতিনিধি
অপহরণের ২০ দিন পরে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার স্কুল ছাত্র অন্তরের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে নগরকান্দা উপজেলার পাগলাপাড়া গ্রামের রাস্তার পাশে খাদের মধ্যে মাটি চাপা দেয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান জানান, পুলিশ অপহরণ মামলার আসামি মাহাবুব আলমকে গেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অন্তরকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে সে। তার দেখানো জায়গা থেকেই অন্তরের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, অপহরণের পর ওই রাতেই অর্থাৎ ৮ জুন রাতেই গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে অন্তরকে হত্যা করা হয়। পরে পাগলা পাড়া গ্রামের রাস্তার পাশে খাদে মাথা নিচ দিকে দিয়ে পুতে রাখে।
হত্যার কারণ হিসেবে আটককৃতদের বরাত দিয়ে এই কর্মকর্তা জানান , আসামি খোকনের সাথে অন্তরের পরিবারের পারিবারিক ঝামেলা ছিল, মামলাও চলছিল এ নিয়ে। এবং খোকনের পরাকীয়া ছিল গ্রামের এক মহিলার সাথে। খোকন ও ঐ মহিলাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে অন্তর।
পরে সব আসামি মিলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে স্কুল ছাত্র অন্তরকে হত্যা করে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, এটি কোন অপহরণ কিংবা মুক্তিপণ আদায় এর ঘটনা ছিল না, হত্যার উদ্যেশ্যেই অন্তরকে অপহরণ করেছিল তারা।
মুক্তিপণ নেয়ার ব্যাপারে এই কর্মকর্তা জানান, হত্যা করার প্রায় ৭ দিন পরে এরা ভাবে মেরেই তো ফেলছি, দেখি কিছু টাকা আদায় করা যায় কিনা সেই ভাবনা থেকেই মুক্তিপণের টাকা চায়। যা পুলিশের কাছে স্বীকারও করেছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন তারাবি নামায পরতে গিয়ে নিখোঁজ হোন তালমা নাজিম উদ্দিন স্কুলের অষ্টম শ্রেনির ছাত্র গ্রিস প্রবাসী আবুল হোসেন মাতুব্বরের ছেলে অন্তর। এর পরে ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অন্তরের মায়ের মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। ১৪ জুন রাতে অপহরণকারীদের বলা জায়গাতে মুক্তিপণের ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকাও দেয় অন্তরের মা। কিন্তু এর পরেও ছেলের মুক্তি মেলেনি। গত ২২ তারিখে এই বিষয় নিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অন্তরের মা জান্নাতী বেগম। আর ২৬ জুন তালমা নাজিমউদ্দিন স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষকরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে তালমা নগরকান্দা সড়কে।
এদিকে লাশ উদ্ধার এর খবর ছড়িয়ে পরলে পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয় সেখানে। পরিবারের একটাই দাবি এখন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক অন্তরের হত্যাকারীদের।
Leave a reply