জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাসের পর ইউক্রেনে অভিযান জোরদার করেছে রাশিয়া

|

রয়টার্স থেকে সংগৃহীত ছবি।

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ হঠাৎই পেলো নতুন মাত্রা। জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাসের পর ইউক্রেনে অভিযান জোরদার করেছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০টির বেশি স্থানে মিসাইল ছুঁড়েছে পুতিন প্রশাসন। এ পরিস্থিতিতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এদিকে, প্রতিরোধের পাশাপাশি, হামলার পরিধি বাড়িয়েছে ইউক্রেনও। তারা খেরসনের দিকে অগ্রসর হওয়ায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরাচ্ছে রাশিয়া।

রুশ মিসাইল-ড্রোন হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশের এলাকা। আগ্রাসন বন্ধ নেই মাইকোলাইভ-খারকিভ-জাপোরিঝিয়া-নিপ্রোর মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোয়ও। ইউক্রেনের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রুশ তাণ্ডবের সাক্ষী হয়েছে অন্তত ৪০টি শহর-লোকালয়।

মূলত, রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাসের পরই বেড়েছে পুতিন প্রশাসনের ক্ষোভ। অবশ্য, সাধারণ পরিষদের জোটবদ্ধ সিদ্ধান্তের প্রশংসায় ভাসছে মার্কিন প্রশাসন।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, জাতিসংঘে ১৪৩টি দেশ রাশিয়ার ভুয়া গণভোট এবং জোরপূর্বক অর্ন্তভূক্তিকরণের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে। এখানেও বৈশ্বিক সমর্থন ও ঐক্য ধ্বংস করতে চাচ্ছিলো রাশিয়া। প্রত্যেক দেশের ভোটাধিকার-সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলো।

এদিকে, ইউক্রেনীয় সেনাবহরের অগ্রযাত্রার কারণে দখলকৃত খেরসন অঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরাচ্ছে রাশিয়া। নিচ্ছে সীমান্তবর্তী শহর রোস্তোভে। কেননা, বৃহস্পতিবারই রুশ সেনাবহরের ২৫টি লক্ষ্যবস্তুতে অন্তত ৩২ দফা হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী।

খেরসন অঞ্চলে নিযুক্ত রাশিয়ার প্রধান কর্মকর্তা ভ্লাদিমির সালদো বলেছেন, গেলো ২৪ ঘণ্টায় খেরসন অঞ্চলের বিভিন্ন শহর-লোকালয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা। ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল-বাসভবন-মাকের্ট-স্কুল। আমরা স্বেচ্ছায় গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত হলেও, সেটি মানতে পারছে না জেলেনস্কি প্রশাসন। প্রাণহানি এড়াতে তাই মস্কোর সিদ্ধান্তে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের।

অবশ্য, এতেও যুদ্ধাপরাধের মামলা-তদন্ত থেকে রেহাই পাচ্ছে না রাশিয়া। বৃহস্পতিবারই ইউরোপীয় ইউনিয়ন সাফ জানিয়েছে, এবার শুরু হবে অপরাধগুলোর সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচার।

ইউরোপিয়ান কমিশনার ফর জাস্টিস দিদিয়ের রেইন্ডার্স বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে ১৪টি সদস্য রাষ্ট্র তদন্ত শুরু করেছে। এখনও বিচারে গড়ায়নি সে প্রক্রিয়া। এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ঘটনা এবং তিন হাজার দুশো’ যুদ্ধাপরাধ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। রয়েছে সন্দেহভাজন কমপক্ষে ১৭৬ জনের তালিকা। সবগুলো মামলা সমন্বয়ের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং ইউরোপিয়ান মানবাধিকার বিষয়ক আদালতের দ্বারস্থ হবো আমরা।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিলে; তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে গড়াতে পারে সংঘাত- সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি আলেকজান্ডার বেনেডিক্টভ। তবে, হুমকি-হামলার মাধ্যমে মানচিত্র থেকে ইউক্রেনের মতো সার্বভৌম রাষ্ট্রকে রাশিয়া মুছে ফেলতে পারবে না- এমনটাও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply