ল্যাবে তৈরি করা হচ্ছে মাংস। উদ্ভিদের নানা উপাদান থেকে তৈরি এ মাংসের স্বাদ হুবহু আসলটির মতোই। বিশ্বের জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। অদূর ভবিষ্যতে মানুষের পুষ্টির চাহিদার কথা মাথায় রেখে কৃত্রিম উপায়ে মাংস তৈরি করছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে, ইসরায়েলের রেডেফাইন মিট নামের একটি কোম্পানি ইউরোপজুড়ে ল্যাবে তৈরি এ মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে।
ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গরু, ছাগল কিংবা হাঁস, মুরগি নয়- মাংস তৈরি করা হচ্ছে উদ্ভিদের বিভিন্ন উপাদান থেকে। ল্যাবে তৈরি কৃত্রিম এ মাংসের স্বাদ ও গুণগত মান হুবহু আসল মাংসের মতোই।
বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রোটিনের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, যে হারে মানুষ বাড়ছে সে হারে বাড়ছে না পশু-পাখির সংখ্যা। প্রতিদিন বিপুল প্রাণী হত্যার কারণে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। আর এ কারণেই বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ল্যাবে তৈরি মাংস।
মানুষের এ ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখে ইউরোপজুড়ে বড় পরিসরে কৃত্রিম মাংস বিক্রি শুরু করতে যাচ্ছে ইসরায়েলের রেডেফাইন মিট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ইসরায়েল, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানিতে পাওয়া যায় তাদের এ পণ্য। পরিধি আরও বাড়াতে, ফ্রান্স ভিত্তিক একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছে তারা।
ল্যাবে মাংস তৈরিতে ব্যবহার করা হয় সয়া, মটর, ছোলা, বিটরুট ও নারকেলের মতো উপাদান। সম্প্রতি নতুন একটি থ্রিডি মেশিন বানিয়েছে কোম্পানিটি, যা দিয়ে দিনে কয়েক টন মাংস উৎপাদন সম্ভব।
রেডেফাইন মিটের কর্মকর্তা ইয়ারন এশেল বলেন, এই মেশিনে নিজের পছন্দমতো উপাদান দিয়ে স্টেক তৈরি করা সম্ভব। মাংসের ভেতরে ও বাইরে কী পরিমাণ চর্বি থাকবে সেটাও যে কেউ নির্ধারণ করে দিতে পারবে। এটি খাওয়ার পর প্রাণীর মাংসের সাথে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাবেন না।
রেডেফাইন মিটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এশকার বেন শিটরিট বলেন, কীভাবে মাংসের স্বাদ আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে আমরা দু’বছর ধরে কাজ করেছি। দীর্ঘ গবেষণার পর উদ্ভিদের কয়েকটি উপাদান চিহ্নিত করা হয়েছে যা প্রাণীর মাংসের টিস্যুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই স্টেকগুলো থেকে হুবহু প্রাণীর মাংসের স্বাদ পাওয়া যাবে।
স্পেনের নোভামিট, যুক্তরাষ্ট্রের বিয়ন্ড মিটের মতো আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও কৃত্রিম মাংস তৈরি করে। যদিও প্রাণীর মাংসের চেয়ে এর দাম তুলনামূলক বেশি।
/এনএএস
Leave a reply