সিনিয়র করেসপনডেন্ট, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে কথা বলাকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। পরে দলীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আসে। মঙ্গলবার (১৮অক্টোবর) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরে শেখ রাসেল ৫৯তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ‘ওর (প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী কেএম বজলুল হক রিপন) কোনো অফিস ছিল না, কোনো মিটিং মিছিল ছিল না। ওর জন্য তো বিএনপি, জাসদ-জাতীয় পার্টি মাঠে নামে নাই। তাহলে কোন শক্তির বলে সে (প্রার্থী) আমারে প্রায় খেয়ে ফেলছিল।’
তিনি আরও বলেন, সত্য হলেও আমাদের মধ্যে মতো বিরোধ এবং ক্ষীণ হলে অনৈক্য আছে। বিরোধ নিয়ে, অনৈক্য নিয়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে কী করে জাহিদ মালেক, নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও মমতাজকে আমরা জেতাবো!
এরপর বক্তব্যের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনের সিংগাইর উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরতেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম গোলাম মহীউদ্দীনকে নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেন। বক্তব্যের মধ্যেই আব্দুস সালামকে চুপ করতে বলেন মহীউদ্দীন। এরপর তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা এবং হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের কথায় মহীউদ্দীন চুপ থাকলেও নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ার থেকে দাঁড়িয়ে সালাম মহীউদ্দীনকে ধমক দিয়ে চুপ থাকতে এবং নিজেকে জানতে ও চিনতে বলেন। পরে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কথা বলায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। বিষয়টা তেমন কিছু না।
সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মহীউদ্দীন বলেন, সিংগাইরে যে ভোট পেয়েছি তা নিয়ে কথা বলতেই ষড়যন্ত্রকারী আব্দুস সালাম বাধা দেন। এক পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সামনে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন।
আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবিএম হেলাল উদ্দিন, আব্দুল মজিদ ফটো, তুষার কান্তি সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদরুল ইসলাম বাবলু, সুলতানুল আজম খান আপেল ও দফতর সম্পাদক এহতেশাম হোসেন খান ভুনুসহ দলীয় অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন আনারস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৪৫২টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চশমা প্রতীকের কেএম বজলুল হক খাঁন রিপন পেয়েছেন ৪২৫ ভোট। মাত্র ২৭ ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন। এর আগে ২০১১ সালে প্রশাসক এবং ২০১৭ সালে নির্বাচনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
/এডব্লিউ
Leave a reply