বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যপতন, তবু কেনো প্রভাব নেই দেশে?

|

সাইফুল ইসলাম:

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম অনেকটাই স্থিতিশীল। প্রতি সপ্তাহেই বৈশ্বিক বুকিং দর কমছে। তবে এরই মধ্যে সয়াবিনের দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। আমদানিকারকরা অনেক ক্ষেত্রে কম দামে কিনলেও বিক্রি করছে সরকারের বেধে দেয়া দরেই। এতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো লাভের মুখ দেখলেও পকেট কাটা যাচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বলছে, জাহাজীকরণে কিছুটা সময় লাগে। এজন্য বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব পড়তে কিছুটা দেরি হয়।

সাধারণত, আমদানি করা কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় ট্যারিফ কমিশন। তবে অভিযোগ আছে, দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে যতটা তৎপর তারা, বৈশ্বিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে কমানোর ক্ষেত্রে তাদের গতি ততটাই মন্থর। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলছেন, সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও ক্রেতাদের কিনতে হয় বেশি দামেই। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, বিশ্ব বাজারে তা কমে গেলেও দেশের বাজারে কখনোই তার সমন্বয় হয় না।

গত ২২ সেপ্টেম্বর খোলা চিনির দর ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ৮৪ টাকা ও প্যাকেটজাত ৯৫ টাকা থেকে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের চাপে দুই সপ্তাহেরও কম ব্যবধানে আবারও আগের দামেই ফেরে চিনির বাজার। অন্যদিকে, বছরের শুরুতে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ওঠে ১ হাজার ৯৫৬ ডলার। বর্তমানে দাম নেমে এসেছে ১ হাজার ৫০০ ডলারে। চলতি বছরের মার্চ থেকে অন্তত সাত দফা কমানো ও বাড়ানো হয় তেলের দাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে দামে এসে ঠেকেছে তাও আমদানিকারকদের কেনা দামের তুলনায় অনেক বেশি, এমনটাই বলছেন খুচরা বিক্রেতারা।

এ নিয়ে ক্যাব বলছে, বাজারে অস্থিরতা তৈরির অন্যতম কারণ হলো আমদানির লাইসেন্স অল্প সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যাওয়া। তাই বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাও নেই। এ নিয়ে ক্যাবের উপদেষ্টা প্রফেসর এম. সামছুল আলম বলেন, কিছু সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্ঠান সংঘবদ্ধভাবে যে দাম নির্ধারণ করবে সেটিই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। যদি যে খুশি সে আমদানি করতে পারতো তাহলে বাজারে প্রতিযোগিতা থাকতো। কিন্তু শুরুদেই সেখানে সীমাবদ্ধতা তৈরি করে দেয়া হয়েছে।

যদিও বাজার আগের তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করছে ভোক্তা অধিদফতর। সংস্থাটির দাবি, জাহাজীকরণের জন্য কিছুটা সময় লাগে। এজন্য কম দামে পণ্য পেতে অপেক্ষায় থাকতে হয় ক্রেতাদের। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বিশ্ব বাজারে দাম কমার পরই সেটি ভোক্তা পর্যায়ে আসতে ২ থেকে আড়াই মাস সময় লাগে। কারণ পণ্যবাহী জাহাজ পৌঁছানোর একটা ব্যপার থাকে। এ কারণে আজ বিশ্ব বাজারে একটা পণ্যের দাম কমলে কালই তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply