রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প: ‘খরচ একটু বেশি হলেও অযৌক্তিক নয়’

|

মাহফুজ মিশু:

ভারতের তামিলনাড়ুতে তৈরি হচ্ছে দেশটির সবচে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। এরইমধ্যে উৎপাদনে হাজার মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট। ভারত সরকারের সাথে যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রোসাটম। একই কোম্পানি রূপপুরে বাস্তবায়ন করছে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প। রূপপুরের উৎপাদন ক্ষমতা কুদামকুলানের চেয়ে ৪শ’ মেগাওয়াট বেশি। গড় সক্ষমতা সমান হলেও প্রতি মেগাওয়াটে মূলধন ব্যয় ৫০ লাখ ডলার, যা ভারতের চেয়ে বেশি।

বর্তমানে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াটের রূপপুরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। রূপপুরের নির্মাণ ব্যয় নিয়ে তাই সমালোচনা করেন অনেকে।

প্রকল্প ব্যয় প্রসঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল আহসান জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের খরচ কিছুটা বেশি হলেও অযৌক্তিক নয়। প্রথম প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু খাতে খরচ অন্য দেশের তুলনায় বেশি। প্রশিক্ষণ বাবদও নতুন কাজে বাজেট বেশি রাখতে হয়েছে।

এদিকে, দেশের সবচে বড় এই প্রকল্পের ব্যয় আর বাড়বে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। ডলার সংকটে বিকল্প মুদ্রা রুবলে লেনদেনের বিষয়টিও এগুচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। রূপপুর আর কুদানকুলামের প্রযুক্তি এক হলেও নকশায় পার্থক্য থাকায় খরচ বেশি বলেও উল্লেখ করছেন নীতিনির্ধারকরা।

রূপপুরের ৯০ শতাংশ অর্থ ঋণ হিসেবে আসছে রাশিয়া থেকে। বাকি যে ১০ শতাংশ বাংলাদেশের দেয়ার কথা, চলমান ডলার সংকটে তার কিস্তি বিঘ্নিত হয়েছে খানিকটা। নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসলে ২০২৬ সাল থেকে ৪ শতাংশ সুদসহ শোধ করতে হবে মস্কোর দেয়া ঋণ।

জিয়াউল আহসান বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতর কারণে ১০ শতাংশের ঋণের দুইটি কিস্তি বোধহয় আমরা ইউএস ডলারে দিতে পারছি না। এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। প্রকল্পে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, দুইটি ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার দুই বছর উত্তীর্ণ হওয়ার পরে ঋণ পরিশোধের সময় শুরু হবে।

চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ আর মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ডলারে লেনদেন চ্যালেঞ্জ এই প্রকল্পে। তাই বিকল্প উপায়ে তা করার পথে হাঁটছে দুই দেশ। ইয়াফেস ওসমান বলেন, দুই পক্ষই চেষ্টা করছে এটি সমাধান করার। কেউ কারও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। রূপপুরের অভিজ্ঞতায় পরবর্তী প্রকল্পের খরচ কম হবে বলে আশাবাদী সরকার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply