ব্রেক্সিট এবং কোভিড-১৯ মহামারিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্বে শুরু হয়েছে জ্বালানি ও খাদ্য ঘাটতি। চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন ভারতীয় বংশদ্ভুত ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ঋষি সুনাক। খবর পার্সটুডে।
ব্রিটেনের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গত অর্ধশতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংকটের মুখোমুখি। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব বুঝে নিয়েই ক্যাবিনেট গঠন করেন সুনাক। একইসাথে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারকে কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
নবগঠিত মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আনেননি সুনাক। জেমস ক্লেভারলিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বেন ওয়ালেসকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং জেরেমি হান্টকে নয়া ক্যাবিনেটের অর্থমন্ত্রী হিসেবে বহাল রেখেছেন। ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরিয়ে এনেছেন গ্রেট ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাবকে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দেয়া এক বক্তৃতায় দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন সুনাক। এ সময় তিনি অবিলম্বে অর্থবাজার এবং করনীতি স্থিতিশীল করার স্বার্থে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন।
বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ মেগান গ্রেইন বলেছেন, ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিস্থতি ভয়াবহ রকমের খারাপ। যুক্তরাজ্যকে অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে। ব্রিটিশরা বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এমনকি এ লড়াইয়ে তারা দৈনন্দিন খাদ্যপণ্য কেনাও কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। সুনাককে তাই বড় রকমের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।
সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুনাক প্রশাসন নতুন বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। সুনাক সরকারের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এরইমধ্যে সাধারণ ব্যয় কমানো হবে বলে জানিয়েছেন। এছাড়া দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ঋষি সুনাক। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রীও এখন তিনি। মাত্র দুই মাস আগে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচনের দৌড়ে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ঋষি। এবার তারই স্থলাভিষিক্ত হলেন ব্রিটেনের সাবেক এ অর্থমন্ত্রী। কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধির সমর্থন এবং দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন এবং পেনি মরডান্ট সরে দাঁড়ানোয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা নির্বাচিত হন সুনাক। তবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নানান চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু হলো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার যাত্রা।
এএআর/
Leave a reply