নাটোরে বৃদ্ধাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন মামলায় গ্রেফতারকৃত ৯ জন কারাগারে

|

সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:

নাটোরের গুরুদাসপুরে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা কুলছুম বেওয়াকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের মামলায় গ্রেফতারকৃত ৯ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে তাদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের বিচারক আশরাফুন্নাহার রীটা তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে শুক্রবার রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার মৌখাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ নিয়ে ঘটনার পর থেকে সংবাদ প্রচার করে আসছিল যমুনা নিউজ।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধা কুলসুম বেওয়া জানান, তার স্বামী সুরত আলী অনেক দিন আগে মারা গিয়েছেন। তার চার মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। মেজো মেয়ে রফেলা বিয়ের পর থেকেই তার বাসায় জামাইসহ বসবাস করে আসছে। গত মঙ্গলবার হঠাৎ অসুস্থ পড়লে তার মেয়ে জামাই আবুল কাশেম ঔষুধ কিনে এনে তার ঘরে আসে। এর পরপরই আলম, নুরনবী, উজ্জ্বল, বাবু, লিটন নামের প্রতিবেশী যুবক হইচই করতে থাকে। তারা লোকজন জড়ো করে অপবাদ দেয় যে বৃদ্ধা তার জামাইয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন। এ কথা বলার পরেই তারা তাকে টেনে হিচরে বাইরে বের করে নারকেল গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং তাকে ও তার মেয়ে জামাইকে মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকেসহ তার জামাতাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে বৃদ্ধার মেয়ে রফেলা বেগম জানান, তিনি বনপাড়া ক্লিনিকে ছিলেন। তার মায়ের জ্বর হওয়ায় তার স্বামী ওষুধ এনে তার মাকে ডেকে ঔষধ খেতে বলেন। এ সময় তার স্বামী ও মাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে পুলিশ ডেকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় কিছু যুবক। পরে পুলিশ গণউপদ্রব আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে নির্যাতিতদেরই আদালতে প্রেরণ করে। কিন্তু দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ভুক্তভোগীর আইনজীবী মুক্তার হোসেন বলেন, ৭৫ বছর বয়সী কুলসুম বেওয়া ও তার জামাতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে এই বৃদ্ধার বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতেই স্থানীয় কয়েকজন এই মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। সেই সাথে পুলিশও নির্যাতনকারীদের কথা শুনে গণউপদ্রব আইনে মামলা করে তাদের আদালতে প্রেরণ করে। পরে আদালতের বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, গত ২৫ অক্টোবর রাতে নিজ জামাতার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা কুলসুম বেওয়াকে গাছে বেঁধে নির্যাতন চালায় অভিযুক্তরা। পাশাপাশি তার মেয়ে জামাইকে মারধর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা বৃদ্ধা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলা দায়ের করলে অভিযুক্ত আলম, নুরনবী, উজ্জ্বল, বাবু, লিটন, আজাদুল, কমেদ আলী, চাঁন মিয়া ও আজাদুল ফকিরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply