ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধবন্ধে সংলাপের প্রস্তাব তোলা হলেও নেই বিবাদমান পক্ষগুলোর কোনো সাড়াশব্দ। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ অধিবেশনে পরস্পরকে দুষেছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। মস্কোর অভিযোগ- যেকোনো মূল্যে তাদের পরাজয় পশ্চিমাদের মূল লক্ষ্য। সে কারণেই, উপেক্ষা করা হচ্ছে শান্তি আলোচনার বার্তা।
এদিকে, ইউক্রেনকে সহযোগিতার প্রসঙ্গে বিভেদ দেখা দিয়েছে ইইউ এ। জোট সদস্য হাঙ্গেরির দাবি- ইউরোপই সংকটে কোণঠাসা; এ পরিস্থিতিতে বড় অংকের তহবিল পাঠানো বোকামি হবে।
সংলাপ ইস্যুতে জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেঞ্জিয়া বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘে সমঝোতার মাধ্যমে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো রাশিয়া। যে কারণে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনায় আমরা বাধ্য হয়েছি, সেই কারণটি বিনাশ করতে চাই। কিন্তু, পশ্চিমা বিশ্ব বা কিয়েভের কোনো উদ্যোগ নেই। উল্টো- ফ্রন্টলাইনে তারা সেনা-সমরাস্ত্র বাড়াচ্ছে। যেকোনো মূল্যে রাশিয়ার পরাজয়ই তাদের টার্গেট।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে মার্কিন উপ-প্রতিনিধি লিসা ক্যারটি বলেন, জাতিসংঘের নীতিমালা অনুসরণ করেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু, ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রেখে প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান দিচ্ছেন- সমঝোতা বা অর্থপূর্ণ কূটনীতিতে তার কোনো আগ্রহ নেই। তাতে সাফল্য পাবে না রাশিয়া। কারণ, স্বাধীনতা আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য লড়ছে ইউক্রেন।
এদিকে, ইউক্রেনকে জরুরি সহায়তা দিতে ১৯ বিলিয়ন ইউরোর তহবিল গঠন করেছে ইইউ। কিন্তু, জোট সদস্য হাঙ্গেরির ভেটোর কারণে সেটি ছাড়পত্র পাচ্ছে না। দেশটির অভিযোগ- ইউরোপের বাকি দেশগুলোও সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে, কিয়েভকে বিপুল অংকের সহায়তা দিলে, অন্যান্যদের ওপর বাড়বে ঋণের বোঝা।
ইইউ কমিশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস দমব্রোভোস্কিস বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। দিনদিন পরিস্থিতি খারাপের দিকেই গড়াচ্ছে। পানি-তাপ-বিদ্যুৎ ছাড়া দিন কাটাচ্ছেন ১০ লাখের মতো মানুষ। সে কারণেই তহবিল গঠন জরুরি। কিন্তু, জোট সদস্য হাঙ্গেরি এ প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। এজন্য কোনো চুক্তিতে এখনও পৌঁছানো যায়নি। মত পরিবর্তনের জন্য আলোচনা চলছে। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে সমঝোতা হবে বলে প্রত্যাশা তার।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের দেয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী- চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি বেসামরিক। যে তালিকায় রয়েছে ৪১৯ শিশু। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ। যাদের মাঝে, ৭৮ লাখ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
/এসএইচ
Leave a reply