আইএমএফ এর ঋণ পেতে কার্যক্রমে সংস্কার আনছে এনবিআর

|

রিমন রহমান:

আইএমএফ এর ঋণ পেতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। কর অব্যাহতি ও ছাড় কমিয়ে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির শর্ত দিয়েছে ঋণদাতা এই সংস্থা। পাশাপাশি বৃদ্ধি করতে হবে কর জাল। এনবিআর মোট যে রাজস্ব আদায় করে, ভ্যাট থেকেই আসে তার সিংহভাগ। তাই ভ্যাটে অটোমেশনেও জোর দেয়ার তাগিদ দিয়েছে আইএমএফ। বিশ্লেষকরা বলছেন, শর্ত পালনের ক্ষেত্রে দেশীয় অর্থনীতির পরিকাঠামো বিবেচনায় নিতে হবে।

দেশে বর্তমানে কর-জিডিপির হার মাত্র ৯ শতাংশ। যেটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম। ঢালাও কর ছাড় না দিলে জিডিপিতে করের অবদান দাঁড়াতো প্রায় ১৮ ভাগ। আইএমএফ বেশ কয়েক বছর আগ থেকেই রাজস্ব খাতের সংস্কার চেয়ে আসছে। সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবার ক্ষেত্রে এবার এই সংস্কার পদক্ষেপের দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে চায় সংস্থাটি। এরইমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর এর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, যে সমস্ত জায়গায় এনবিআর কর ছাড় দিয়ে আসছেন এবং সহযোগিতা করে আসছে, তাদের সক্ষমতা বাড়ার সাথে সাথে এ সুবিধা কিছু আমরা তুলে নিয়েছি।

বিষয়টি এবার নিবিড় তদারকিতে রেখেছে আইএমএফ। সংস্থাটির মিশন গেলো অক্টোবর থেকে ১৫ দিনের সফল শেষে ফিরে এনবিআরকে দুই পাতার চিঠি দিয়েছে; যেখানে সংস্কার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, সব পর্যায়ে কর ছাড় দেয়াতেই কমছে রাজস্ব আদায়।

এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, যে বিদ্যমান অবস্থায় কর আহরণ চলছে এবং যে অর্থনীতি থেকে কর আহরণ করছি, এর দুটোই কিন্তু ভালো অবস্থায় নেই। সুতরাং নাটকীয়ভাবে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, সেরকম কোনো সম্ভাবনা নেই।

বলা হচ্ছে, মন্দার মধ্যেও গেলো দুই বছরের মতোই এবারও রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হবে। কিন্তু আয়ে বড় ধরনের লাফ দিতে আইএমএফ এর শর্ত পরিপালনে কতোটা উদার হওয়া উচিৎ?

আব্দুল মজিদ বললেন, পক্ষের-বিপক্ষের বা সামনের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। যেমন টাকাটা পাওয়ার জন্য আমি একটা আইনকে মেনে নিলাম, নিয়ে আমি দেখলাম যে ওটা আমি বাস্তবায়ন করতে পারবো না। তখন তো আমার দুই দিকেই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

সাম্প্রতিক রাজস্ব আয়ে যে প্রবৃদ্ধি, তা মূলত মূল্যস্ফীতি জনিত কারণে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ডিজিটালাইজেশন সিস্টেম করা, করজাল বিস্তৃত করা, কর ফাঁকি রোধ করা- এগুলো যদি চিহ্নিত করা না যায়, তাহলে কিন্তু মূল্যস্ফীতি দিয়ে যে প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তা খুব একটা স্থিতিশীল আয় নিশ্চিত করতে পারবে না।

এদিকে, উন্নয়নমূলক প্রকল্প, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কৃষি খাত, বেসরকারি শিল্প সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শুল্ক-কর ছাড়সহ নানা সুবিধা দিচ্ছে সরকার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply