এক নজরে মেট্রোরেল

|

বহুল কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধন এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেগা এই প্রকল্পের দৈর্ঘ্য বেড়েছে। বেড়েছে খরচও। তবে, এটি চালু হলে সড়কে জনভোগান্তি কমবে অনেকখানি, এমনটাই মনে করছে নগরবাসী।

ঢাকার যানজট নিরসনে ২০১২ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয়। পরিকল্পনা ছিল, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে বিশ কিলোমিটারের এমআরটি-ছয়। মূল অবকাঠামোর নির্মাণ শুরু হয় ২০১৭ সালে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটির নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল বেশ কয়েকবার। কিন্তু করোনা সেই লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। তারপরও এক বছর আগেই অর্ধেক অংশ চালু হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এমআরটি-ছয় বাড়ানো হয় কমলাপুর পর্যন্ত। বাড়ে প্রকল্পের মেয়াদও।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ২০২২ এর শেষে এসে আমরা মেট্রোরেল চালু করে দিচ্ছি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মতিঝিল এবং ২০২৫ সালের জুনে কমলাপুর পর্যন্ত চালু হবে মেট্রো। ২০২৪ সালে এটি চালুর কথা ছিল। কোভিডের কারণে সময় লাগছে।

প্রকল্পের সার্বিক ব্যয় মেটাতে জাইকার ঋণ ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে সরকার।

মেট্রোরেলে যা যা থাকছে তা দেখে নেয়া যাক এক নজরে।

দৈর্ঘ্য: এমআরটি লাইন-৬, উত্তরা উত্তর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিলোমিটার (২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার)।

মেট্রোরেলের স্টেশন: উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশে মোট স্টেশন থাকছে ১৭টি। এছাড়া, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের থাকবে ৯টি স্টেশন।

উত্তরা উত্তর-উত্তরা সেন্টার-উত্তরা দক্ষিণ-পল্লবী-মিরপুর ১১- মিরপুর ১০- কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া-আগারগাঁও-বিজয় সরণি-ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার-শাহবাগ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-বাংলাদেশ সচিবালয়- মতিঝিল এবং কমলাপুর।

যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা: প্রতি ঘণ্টায় মেট্রোরেল ৬০ হাজার ও দৈনিক ৫ লাখ যাত্রী (উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত) পরিবহন করতে পারবে।

ট্রেনের সংখ্যা: এই প্রকল্পে থাকছে ছয়টি কোচ বিশিষ্ট ২৪টি ট্রেন। তবে পরবর্তীতে ট্রেনগুলো আট কোচে উন্নীত করা যাবে।

কোচগুলোর যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা: ট্রেনের মাঝের ৪টি কোচের প্রতিটির সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা ৩৯০ জন। ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা ২৩০৮টি। এছাড়া, ট্রেইলর কোচের প্রতিটি সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

মেট্রোরেলের গতি: সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার।

ভাড়া: মেট্রোরেলে প্রতি  কিলোমিটারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া লাগবে ৬০ টাকা। উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া ১০০ টাকা।

যাতায়াতের সময়: উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে ১৬টি স্টেশনে থামাসহ সময় লাগবে ৩৮ মিনিট। উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যে অংশের উদ্বোধন হচ্ছে সেই অংশে কোনো স্টেশনে না থেমে স্টপেজসহ ১৭ মিনিট এবং স্টপেজ ছাড়া ১০ মিনিট সময় লাগবে।

ব্যয়: উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের অবকাঠামোগত মোট খরচ প্রায় ৩১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply