একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পনের একটি ছবি দিয়ে টুইট করে পাকিস্তানকে হুমকি দিয়েছেন আফগানিস্তানের এক নেতা। তেহরিক-ই তালেবানের হামলা ইস্যুতে দু’দেশের চলমান উত্তেজনা এ টুইট নিয়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। খবর ফার্স্টপোস্ট’র।
সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে পাকিস্তানে। বেসামরিক নাগরিকদের পাশাপাশি তেহরিক-ই-তালেবানের হামলার শিকার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও। গেলো নভেম্বরে ইসলাবাদের সাথে যুদ্ধবিরতি শেষ হয় টিটিপির। তারপরই তারা পাকিস্তানে হামলা জোরদার করে। সীমান্ত এলাকা ছাড়াও হামলা হয় ইসলাবাদেও।
এ অবস্থায় পাকিস্তান সরকার বলছে, জঙ্গি সংগঠনটির সাথে আফগান তালেবানের সংযোগ রয়েছে। আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পরই তৎপরতা বেড়েছে তাদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলো সপ্তাহে জরুরি বৈঠকে বসে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি।
এই বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো দেশকেই সন্ত্রাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র হতে দেয়া হবে না। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সব অধিকার আছে পাকিস্তানের। আসে সামরিক অভিযানের ঘোষণাও।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, আমাদের দেশে কোনো সন্ত্রাসী আস্তানা নেই। যা আছে সবই আফগানিস্তানে। পাকিস্তানে যেসব হামলা হচ্ছে সেগুলো সবই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে আফগানিস্তান থেকে। তালেবানের পরিকল্পনাতেই এসব হামলা হচ্ছে।
এ অবস্থায়, ইসলামাবাদকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান। টিটিপির সাথে সম্পর্কের কথা অস্বীকারও করছে তারা। বাংলাদেশের সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদারদের আত্মসমর্পণের একটি ছবি টুইট করে তালেবান নেতা আহমেদ ইয়াসির হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, বাড়াবাড়ি করলে আবারও একাত্তরের পরণতি বরণ করে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে পাকিস্তান।
আহমেদ ইয়াসির, তালেবান নেতা আহমেদ ইয়াসির বলেন, সোভিয়েত ও সম্প্রতি মার্কিন বাহিনীর পরাজয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই পাকিস্তানকে। পৃথিবীর বড় বড় সাম্রাজ্যের কবর রচিত হয়েছে আফগানিস্তানে এটা ভুলে যাবেন না।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, আত্মরক্ষার অধিকার আছে পাকিস্তানের। তবে অনেক বিশ্লেষকই বলছেন, তালেবানকে দুর্বল করতে পাকিস্তানকে দিয়ে আফগানিস্তানে হামলা চালাতে পারে পশ্চিমা বিশ্ব।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, পাকিস্তান যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে আমরা সমর্থন জানাই। কারণ আত্মরক্ষার অধিকার সব দেশেরই রয়েছে।
এ অবস্থায় অনেকেই বলছেন, পাকিস্তানের নিজেদের নীতির কারণেই সৃষ্টি হয়েছে জটিলতার। দুই দেশের উত্তেজনার ফলে লাভ হবে না কোনো পক্ষেরই, তবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আফগান জনগণ।
/এনএএস
Leave a reply