খোলা হয়েছে পাগলা মসজিদের দানবাক্স

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, কিশোরগঞ্জ:

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবারও জমা পড়েছে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণ ও রৌপ্যালঙ্কার। এসব দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণ-রৌপ্যের অলঙ্কারের ভিড়ে মিলেছে অসংখ্য চিঠিও। এসব চিঠিতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষরা জানিয়েছেন নানান আকুতি।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে খোলা হয় এসব দানবাক্স। ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে মোট আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর সিন্দুকগুলো খোলা হয়। এবারও ৩ মাস ৬ দিন পর খোলা হয়েছে সিন্দুকগুলো।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুকগুলো খুলে ২০ বস্তারও বেশি দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং স্বর্ণ-রৌপ্যের অলঙ্কার মিলেছে। এগুলো গণনার কাজে স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি, মসজিদ ও মাদরাসার কয়েকশ’ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।

এসব টাকা দিয়ে এখানে আন্তর্জাতিক মানের বহুতল বিশিষ্ট কমপ্লেক্স তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী।

এর আগে গত ১ অক্টোবর খোলা হয় পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো। সে সময় রেকর্ড ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।

জনশ্রুতি আছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

এরপরই দূর-দূরান্ত থেকে সকল ধর্মের বিশ্বাসীরা ভিড় করতে থাকেন এই মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিও দান করেন এখানে। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply