গত শনিবার ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডের কাছে হারের পর কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে চাকরিচ্যুত করেছে এভারটন। ওই হারের পর ২০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিক থেকে ২য় অবস্থানে এখনও এভারটন। দলটির দায়িত্ব নেয়ার এক বছর পূর্তির আগেই চাকরিচ্যুত হলেন ল্যাম্পার্ড। গত ৫ বছরের মধ্যে এভারটনের চাকরিচ্যুত ৬ষ্ঠ ম্যানেজার এখন ল্যাম্পার্ড।
স্কাই নিউজের এক প্রশ্নের উত্তরে দলটির মালিক ফরহাদ মশিরি বলেন, ল্যাম্পার্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ব্যাপারটা এখন আর আমার হাতে নেই।
এদিকে, এমন জটিল পরিস্থিতিতেও ল্যাম্পার্ডকে সহানুভূতি জানিয়েছেন দলটির সাবেক অধিনায়ক অ্যালান স্টাবস ও সাবেক ফরোয়ার্ড কেভিন ক্যাম্পবেল।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যালান স্টাবস বলেন, ফ্রাঙ্কের জন্য আমার খারাপ লাগছে। ও এমন এক পরিস্থিতিতে দল সামলাতে এসেছিল যখন আগের ম্যানেজার ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভুল সিদ্ধান্তগুলোর জন্য দল ভুগছিল। এসব নিয়ে ওকে অনেক কাজ করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পুরো ব্যাপারটা একটা খারাপ পরিণতির দিকেই এগুলো। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এ মৌসুমে রেকর্ড ওর পক্ষে নেই, আর এজন্যই ওকে চাকরি হারাতে হলো।
দলটির সাবেক ফরোয়ার্ড কেভিন ক্যাম্পবেল বলেন, নিঃসন্দেহে ফ্রাঙ্ক ভবিষ্যতে ভাল করবে। কিন্তু, এভাবে ওর চাকরিচ্যুতি ক্লাবের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের দিকে আঙ্গুল তোলার সুযোগ করে দিলো। সামনে যেসব সিদ্ধান্ত তারা নেবে সেগুলোর জন্য ওদেরকে ভুগতে হবে। এটা নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই যে সমস্যা শুধু ল্যাম্পার্ডে না, সমস্যা আরও গভীরে।
এর আগে, গত বছরের শেষ দিনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে ১-১ গোলে ড্র এর পর নিজেদের মাঠে ব্রাইটনের কাছে ৪-১ ব্যবধানে হেরেছিল এভারটন। এরপর, আবারও ম্যানইউয়ের সাথে ৩-১ ব্যবধানে হেরে এফএ কাপ থেকে বিদায় নেয় তারা। তারপর, লিড নিয়েও সাউদাম্পটনের কাছে পরাজয় আর সর্বশেষ ওয়েস্টহ্যামের কাছে হারের পর টিম ম্যানেজমেন্ট আর ঠিক ভরসা রাখতে পারছিল না ল্যাম্পার্ডের ওপর। তার থেকেও বড় বিষয় হলো, চলতি মৌসুমে মাত্র ৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে এভারটন।
এদিকে, সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোয় হারের পর এভারটন বোর্ডের ওপর কোনো রাখঢাক না রেখেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন এভারটন ফ্যানরা। আর, সাউদাম্পটনের কাছে হারের পর রীতিমতো বিক্ষোভ মিছিল পর্যন্ত নামিয়েছিলেন ভক্তরা। পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ হয়ে পড়েছিলো যে, ম্যাচ শেষ হবার আগেই নিরাপত্তার কথা ভেবে স্টেডিয়াম ত্যাগ করেন এভারটনের বোর্ড অব ডিরেক্টরস।
অথচ মেরিসাইড পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বলছে, ম্যাচের দিন কোনো ধরনের হামলা বা আক্রমণের কোনো ঝুঁকি ছিল না। তবুও, বোর্ড কর্মকর্তাদের অনুরোধে ম্যাচ শেষ হবার আগেই মাঠের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।
ভক্তদের এমন ক্ষেপে যাওয়ার পেছনে আরও দুটি বড় কারণ আছে। সেগুলো হলো, গত ১৪ মাসের মধ্যে ওয়েস্টহ্যামের বিরুদ্ধে হওয়া ম্যাচটি ছাড়া আর কোনো ম্যাচ দেখতে মাঠে যাননি দলটির মালিক ফরহাদ মশিরি। এমনকি, নিয়মিত মাঠে যেতেন না ব্যাপকভাবে সমালোচিত এবং দীর্ঘদিন ধরে এভারটনের চেয়ারম্যানের পদ দখলে রাখা বিল কেনরাইটও। বোর্ড কর্তাদের এমন উদাসীন আচরণ দারুণভাবে ক্ষেপিয়েছে এভারটনের ভক্ত-সমর্থকদের। অর্থাৎ, সমস্যা শুধু ম্যানেজারে না, ম্যানেজিং কমিটিতেও সমস্যা শেকড় গেড়েছে বেশ শক্তভাবেই।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জানুয়ারিতে রাফায়েল বেনিতেজের স্থলাভিষিক্ত হয়ে এভারটনের দায়িত্ব নেন সাবেক ইংলিশ মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। দায়িত্ব নিয়েই সেবার প্রিমিয়ার লিগ রেলিগেশন এড়িয়েছিল এভারটন।
/এসএইচ
Leave a reply