গ্রেফতারকৃত আসামিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ কেনো দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে, জানাজায় অংশ নেয়ার সময় গাজীপুরের বিএনপি নেতা আলী আজম ও শরীয়তপুরের ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজাকে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর পদক্ষেপ কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে।
গত ডিসেম্বরে গাজীপুরে বিএনপি নেতা আলী আজম প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরা অবস্থায়ই তার মায়ের জানাজা পড়ান। এরপরের মাসে, শরীয়তপুরে আরেকজন আসামি একইভাবে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় অংশ নেন তার মায়ের জানাজায়। এসব ঘটনা গণ্যমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরে, গত ২৪ জানুয়ারি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। কারাবন্দি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজা বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়ে আসার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এ রিটের প্রাথমিক শুনানি হয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে। পরে সেখানে গ্রেফতারকৃত আসামিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানোর বিষয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ কেনো দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। সেই সাথে, এ ধরনের পদক্ষেপকে কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে।
এ প্রসঙ্গে রিটকারী আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, তাদের এই অ্যাকশনটা কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদেরকে কেনো যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- আদালত এই মর্মে রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি ডান্ডাবেড়ি পরানোর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কেনো প্রণয়ন করা হবে না- এ ব্যাপারে একটা হাইপ্রোফাইল কমিটি দিয়ে রুল ইস্যু করেছেন মহামান্য আদালত।
আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশের আইজি, কারা মহাপরিদর্শক, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার, কালিয়াকৈর এবং শরিয়তপুরের পালং থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী কায়সার কামাল আরও বলেন, সরকারপক্ষ, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি প্রিজনস, পুলিশের আইজিপিসহ অন্যান্য যারা পিটিশনার আছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কালিয়াকৈর ও শরীয়তপুর থানার ওসি প্রমুখ এই রুলের জবাব দিবেন।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে, দেশের মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতে সরকার অবৈধ এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই পথ বেছে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন এ আইনজীবী।
/এসএইচ
Leave a reply