মার্কিন আকাশসীমায় চীনের বেলুন অনুপ্রবেশের ঘটনায় আইনপ্রণেতাদের তোপের মুখে পড়েছে বাইডেন প্রশাসন। প্রশ্নের মুখে পড়েছে মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কংগ্রেসের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি জানায়, সরকারের সতর্কতার অভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে অনুপ্রবেশ করতে পেরেছে চীনের বেলুন। বিশ্লেষকরা বলছেন, নানামুখী ইস্যুতে বিবাদের মধ্যেই বেলুনের মতো ঘটনা স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে চীন-যুক্তরাষ্ট্রকে। খবর সিএনএন এর।
শনিবারই (৪ ফেব্রুয়ারি) ভূপাতিত করা হয়েছে চীনা বেলুনটিকে। মার্কিন বিমান বাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে আটলান্টিক মহাসাগরে আছড়ে পড়েছে সেটি। এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজে এখনও জলসীমায় মার্কিন নৌবাহিনীর তল্লাশি চলছে। আবহাওয়া সংক্রান্ত গবেষণা, নাকি গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যে বেলুনটি ওড়ানো হয়েছিল সেটিই নমুনা সংগ্রহের পর যাচাই-বাছাই করা হবে।
এ অবস্থায়, চীনের বেলুন মার্কিন আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ এবং সেটি দীর্ঘ সময় অবস্থানের ঘটনায় নিজ দেশেই তোপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আকাশ প্রতিরক্ষা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন সতর্ক নয় এমন অভিযোগ উঠেছে খোদ মার্কিন কংগ্রেসেই। ব্যর্থতা ঢাকতে ট্রাম্প প্রশাসনের জের টানা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ জানান অনেকে।
মার্কিন কংগ্রেসের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির প্রধান মাইক টার্নার বলেন, এমন ঘটনা এর আগেও হয়েছে। তখনই যদি বাইডেন প্রশাসন কঠোর হতো তাহলে এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার হতো না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, সরকার এই ঘটনা জনগণের কাছ থেকে গোপন রেখেছে। আকাশ প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য যতটা সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এই প্রশাসন ততটা সতর্ক নয়।
তাইওয়ান, উত্তর কোরিয়া ও হংকংসহ নানা ইস্যুতে দীর্ঘ সময় ধরে বিবাদ তুঙ্গে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের। বেলুন ইস্যু এই উত্তেজনাকে আরও উস্কে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে আরও বড় কূটনৈতিক বিরোধের দিকে যাবে দুই দেশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বেলুন ইস্যুতে পরিস্থিতি স্নায়ুযুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। সেই ইঙ্গিত দিয়ে দেশটির সাবেক ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এলব্রিজ কোলবি বলেন, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এ ধরনের বেলুন পাঠানো অস্বাভাবিক নয়। চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের ভূখণ্ডে বেলুন এবং গুপ্তচর বিমান পাঠিয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা বিমান ইপি থ্রি ভূপাতিত করেছিল চীন। প্রশ্ন হলো, হঠাৎ এই মুহূর্তেই কেনো গুপ্তচরবৃত্তির জন্য বেলুন পাঠানোর দরকার পড়লো। তার মানে, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যাতে কোনো পক্ষই কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এই সন্দেহ-সংশয়ই দুই দেশকে ঠেলে দেবে স্নায়ুযুদ্ধের দিকে। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কা আছে দুই দেশের সাধারণ নাগরিকেরই।
এসজেড/
Leave a reply