ভূমিকম্পে বেঁচে গেলেও চরম মানবিক সংকটে তুরস্ক-সিরিয়ার বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা। বৈরী আবহাওয়ায় টিকে থাকাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ, নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই। তীব্র ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে কাটছে দিন। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। আছে খাবার ও পানির সংকট। এমনকি, পরিস্থিতি এতোটাই জটিল যে অনেক দুর্গত এলাকায় এখনও পাঠানো যায়নি ত্রাণসামগ্রী। খবর এএফপির।
একসময়ের শত শত পরিবারের আবাস এখন ধ্বংসস্তূপ। তিনদিন আগেও আত্মীয়-পরিজন নিয়ে সময় কাটানো মানুষগুলো এখন অসহায়ের মতো খুঁজে ফিরছেন প্রিয়জনকে। সিরিয়ার বিধ্বস্ত শহর আলেপ্পোয় ধ্বংসস্তুপের ভিতরে চাপা পড়ে আছে বাবা, মা, ভাই-বোন। তাদের ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রেও যেতে রাজি নন ২৫ বছর বয়সী ইউসুফ। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়, খেয়ে না খেয়ে চেষ্টা করছেন তাদের বাঁচাবার বা উদ্ধারের। তবে শক্ত ইট-কংক্রিট সরানোর সামর্থ্য বা সুযোগ নেই তার রক্তমাংসের শরীরের। বেঁচে থাকাও যেনো এক অভিশাপ হয়ে উঠেছে ইউসুফের মতো তুরস্ক-সিরিয়ার লাখ লাখ মানুষের।
বাড়িঘর হারিয়ে খোলা রাস্তায়, গাড়িতে কাটছে দিন।আফটার শকের ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতেও ভয় পাচ্ছে অনেকে। ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা বলছেন, ভূতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছে এটা। আমাদের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। তাঁবু নেই, স্টোভ নেই। বৃষ্টিতে ভিজছি। বাচ্চাগুলোর ঠাণ্ডা লাগছে। ভূমিকম্পে বেঁচে গেছি। কিন্তু ঠাণ্ডায় মরবো বলে মনে হচ্ছে। কোথাও থেকে কোনো সাহায্য পাচ্ছি না।
এদিকে, খাবারের জন্য দুর্গত এলাকাগুলোয় দেখা গেছে লম্বা লাইন। ভলান্টিয়াররা খাবার-পানি সরবরাহে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বটে তবে সেখানেও আছে মারাত্মক সংকট। খাবারের জন্য লাইনের দাঁড়ানো এক ব্যক্তি বললেন, তিন দিন ধরে না খাওয়া। প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সাহায্য পাইনি। ঠাণ্ডায় কষ্ট পাচ্ছি। বাড়িতে ঢোকার মতো অবস্থা নেই।
তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, উদ্ধারকাজেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তাই, সরকারি ব্যবস্থাপনা কিংবা বিদেশ থেকে পাঠানো ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না বেশিরভাগ এলাকাতেই। এ নিয়ে দেশটিতে তোপের মুখে পড়েছে এরদোগান প্রশাসন।
/এসএইচ
Leave a reply