বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের তালিকা যত দীর্ঘ হচ্ছে ততই বাড়ছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ। ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে কেউ হারিয়েছেন স্ত্রী-সন্তান আর কারও মারা গেছে বাবা-মা। কেউ কেউ এতটাই হতভাগ্য, হারিয়েছেন গোটা পরিবারকেই। সিরিয়ার এক ব্যক্তিরই ২৫ স্বজন মারা গেছে ভূমিকম্পে, আরেকজন হারিয়েছেন পরিবারের ১৩ সদস্যকে। খবর রয়টার্সের।
ধ্বংসস্তূপের সামনে একটি-দুটি নয়, চোখের সামনে পড়ে আছে ২৫ স্বজনের মরদেহ। ভূমিকম্পের তাণ্ডবে মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড সাজানো গোছানো পরিবার। আহমেদ ইদ্রিসের বুকফাটা আর্তনাদে ভারী হাসপাতালের বাতাস।
সিরিয়ায় চলমান একযুগের গৃহযুদ্ধে হারিয়েছিলেন বসতঘর। স্ত্রী-সন্তানদের নিরাপদ আশ্রয় দিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন সারাকিব শহরে। অথচ ভাগ্যের ফেরে ভূমিকম্প কেড়ে নিলো পুরো পরিবারকেই।
ভূমিকম্পে বেঁচে ফেরা আহমেদ ইদ্রিস বলেন, মেয়ে নাতিকে হারিয়েছি। আমার স্ত্রীর পরিবারের কেউই বেঁচে নেই। মোট ২৫ জন স্বজন হারিয়েছি আমি। যুদ্ধ থেকে পালিয়ে একটু নিরাপদে বেঁচে থাকতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু, দুর্ভাগ্য আমাদের পিছু ছাড়েনি।
১৬ সদস্যের পরিবারের ১৩ জনকেই হারিয়েছেন আলেপ্পোর বাসিন্দা বাকের। আঘাত পেয়ে নিজেও এখন হাসপাতালে। একসাথে এত স্বজন হারানোর যন্ত্রণার কাছে নিজের সেই ব্যথা যেন তুচ্ছ।
বাকের বলেন, কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের ওপর ভবনটি ধসে পড়লো। পরিবারের ১৬ সদস্যের ১৩ জনই মারা গেছে। মা-বাবাসহ সবাইকে হারিয়েছে আমি। এক ভাই, এক ভাতিজি আর আমিই শুধু বেঁচে আছি। আমার এক ভাই আর তার স্ত্রী আমার সাথে বাইরে বের হতে পারলেও বাঁচতে পারেনি। তবুও সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।
শুধু ইদ্রিস আর বাকেরই নয়, তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোর প্রায় সব পরিবারেই এখন একই চিত্র। মরদেহের তালিকা যত দীর্ঘ হচ্ছে ততই বাড়ছে স্বজন হারানোর আর্তনাদ।
এখনও অনেকেই হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন আপনজনদের। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই কমে যাচ্ছে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা।
এএআর/
Leave a reply