বরিশালে গোরস্থানের গাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে দুই মাস ধরে বন্দি ১৫টি ছাগল (ভিডিও)

|

কবরস্থানের গাছের পাতা খাওয়ায় ছাগল ধরে নিয়ে যান সিটি করপোরেশনকর্মীরা।

গোরস্থানে ঢুকে গাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে ১৫টি ছাগল আটক করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। দুই মাস অতিবাহিত হলেও, গবাদি পশুগুলো মালিকের কাছে হস্তান্তর করেনি নগর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ আছে, বন্দি অবস্থায় দুটি ছাগল বাচ্চা দিয়েছে। এরইমধ্যে, অযত্নে আর অবহেলায় মারা গেছে একটি বাচ্চা। ছাগল ফিরে পেতে এখন সিটি করপোরেশনসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।

বরিশাল মুসলিম গোরস্থান সংলগ্ন নিজ বাড়ির সামনে ছাগল পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দা রাজিব শাহরিয়ার। গত ৬ ডিসেম্বর অসর্তকতায় ১৫টি ছাগল ঢুকে পরে গোরস্থানে। গাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে প্রাণীগুলোকে আটক করে নিয়ে যায় সিটি কর্পোরেশনের নিরাপত্তা কর্মীরা।

ভুক্তভোগী রাজিব শাহরিয়ার জানালেন, বাসার এখানে আটকে রেখেই ছাগল পালন করি আমি। পাশের জায়গায় খেলার সময় এখানে একটা ছেলে বল নিতে ঢুকেছিল তখনই অসতর্কতায় ছাগলগুলো বের হয়ে গোরস্থানে চলে যায়। আমার ছেলে আমাকে এসে বলার পর সেখানে গিয়ে দেখি সিটি করপোরেশনের ১০-১২ জন প্রহরী আমার ছাগলগুলোকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা কেনো আমার ছাগল ধরে নিয়ে যাচ্ছেন? তখন তারা বলে যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা ছাগলগুলো ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

ছাগলগুলো ফিরে পেতে ৮ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী বরাবর আবেদন করে রাজিবের পরিবার। এ বিষয়ে জানতে প্রধান নির্বাহী ফারুক আহম্মদের মোবাইলে কল করা হলে তিনি কোনো কথা বলেননি, কথা বলেননি প্রশাসনিক কর্মকর্তাও।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এটার ব্যাপারে আমি দায়িত্বশীল না। স্যারের সাথেই কথা বলতে হবে।

আইন বলছে, গবাদিপশু আটকের ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরুল আলম বলেন, ১৮৭১ সালের একটি আইন রয়েছে ক্যাটল ট্রেসপাস অ্যাক্ট নামে, এ আইনটি ১৯৩৮ সালে রিপিলড হয়েছে। এ আইন অনুযায়ী, গবাদিপশু খোয়াড়ে রাখা হলে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সবাইকে অবহিত করবে। এবং ৭ দিনের মধ্যেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে।

ছাগলগুলো আটকে রাখা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক শাখার একটি গ্যারেজে। আটকের সময় দুটি ছাগল গর্ভবতী ছিলো। গবাদিপশুগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও জানতে পারছেন না ভুক্তভোগী রাজিব।

ভুক্তভোগী রাজিব শাহরিয়ার বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে আমার ছাগলগুলো কোনো তত্ত্বাবধান হচ্ছে না, কোনো ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। ছাগলগুলো বেঁচে আছে কি না এটাই এখনও জানতে পারিনি আমি। আমার ছাগলগুলো আমার সন্তানের মতো।

পশুগুলোর অবস্থান জানতে গ্যারেজটিতে গেলে ভেতরে প্রবেশেরও অনুমতি পাওয়া যায়নি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply