তিস্তা সেচ প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন না আশপাশের সব কৃষক। শুধু প্রকল্প এলাকার চাষিরাই কম খরচে সেচ দিতে পারছেন জমিতে। কিন্তু, এখনও প্রায় ৪১ হেক্টর জমি রয়ে গেছে এ সুবিধার বাইরে। ফলে, প্রকল্প এলাকার বাইরের কৃষকদের খরচ হচ্ছে দশ গুণেরও বেশি। বাড়তি এ ব্যয়ের হাত থেকে মুক্তি পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান সুবিধাবঞ্চিত চাষিরা।
পানিতে টইটুম্বর তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান খাল। ক্ষেতে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ দিতে প্রকল্প এলাকার ছোট-বড় সব খালেই ছাড়া হয়েছে ভূ-উপরিস্থ উর্বর পানি। এ পানি পৌঁছে যাচ্ছে নীলফামারী, ডালিয়া ও সৈয়দপুরের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে। যা ব্যবহৃত হচ্ছে জমি তৈরি, চারা রোপন ও সার প্রয়োগে। আর এ পানির জন্য একর প্রতি গুণতে হচ্ছে মাত্র ৪৮০ টাকা।
একজন সুবিধাভোগী কৃষক বলেন, তিস্তা সেচ প্রকল্পের আগে এই জমিগুলোতে সামান্য কিছু পাট, ধান বা তামাক ছাড়া আর কোনো চাষাবাদ হতো না। তিস্তার পানিটা খুব উপকারী। আমাদের সার কম লাগে, ফসলও ভাল হয়। মাটির নিচের লেয়ারও বৃদ্ধি করছে। খরচও কম।
তবে, অপরপ্রান্তের চিত্র ঠিক উল্টো। প্রকল্পের বাইরে থাকা নিলফামারীর বাকি ৪০ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে সেচ দিতে নাকাল অবস্থা চাষিদের। শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিতে একরপ্রতি গুণতে হচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
বঞ্চিত এক কৃষক জানালেন, তেল আগে কিনতাম প্রতি লিটার ৬০ টাকায়। আর এখন কিনি ১০৯ টাকা প্রতি লিটার। প্রতিদিন অন্তত ১ লিটার তেল তো লাগেই। বিঘাপ্রতি বিদ্যুৎ খরচ ২৮০০-৩০০০ টাকা। সরকার আমাদের দিকে একটু সুদৃষ্টিতে তাকালে আমরা হয়তো কিছুটা উপকৃত হতাম। বিদ্যুতের দাম এতো বেড়েছে যে আবাদ করে আর লাভ উঠছে না।
চলতি মৌসুমে তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকার প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার মতো পানি আছে বলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
নীলফামারী পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, এই পানিতে আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ বাড়ছে। কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। ডিপ টিউবওয়েলের ওপরে চাপ কমছে।
প্রসঙ্গত, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার প্রায় ৪ হাজার টনেরও বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি অফিস।
/এসএইচ
Leave a reply