বইমেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই

|

নেই দৃষ্টি শক্তি, কিন্তু অসীম জীবনী শক্তিতে উদ্ভাসিত যেন একেকটি প্রাণ। আঙুলের স্পর্শেই পৃথিবীকে জানার অদম্য স্পৃহা নিয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা করে চলেছেন সংগ্রাম। প্রতিবন্ধী নয়, দৃষ্টিজয়ী এ সংগ্রামীদের জন্য বিশেষ আয়োজন স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা। অমর একুশে গ্রন্থমেলার বাংলা একাডেমি অংশের এ স্টলে প্রতিদিন ব্রেইল বই স্পর্শ করে নতুন নতুন বই পড়ছে দৃষ্টিহীনরা।

এদের অনেকের কাছেই চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কারও কাছে আবছা সবকিছুই। এই নিকশ কালোর মাঝেও নিজেই যেন আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখিয়ে নিচ্ছেন। অন্ধ বা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, যে নামেই ডাকা হোক, পড়তে শেখা ও নতুনকে জানার অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাদেরকে করেছে দৃষ্টি জয়ী। ব্রেইল পদ্ধতির বইয়ে আঙুলের স্পর্শে তারা পড়ছেন কবিতা, উপন্যাস। জানছেন সাহিত্যের অনেক অজানাকে।

অমর একুশে বইমেলার বাংলা একাডেমি অংশে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা স্টলের সামনে থমকে দাঁড়ান অনেকেই। বাকরুদ্ধ হয়ে আবিস্কার করেন স্বাভাবিক সক্ষমতা না পেলেও কি অমীয় ক্ষমতায় বলীয়ান এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা। নিজেদের সৌভাগ্যবান দাবি করলেও, তাদেরকেই এগিয়ে রাখতে কুণ্ঠা বোধ করেন না কেউ।

সমাজে অবহেলিত হলেও, সমাজ পরিবর্তনের কন্ঠস্বর হতে চান এদের অনেকেই। পাল্টে দিতে চান সকলের দৃষ্টিভঙ্গি। কেউ বা রচনা করতে চান দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য সাহিত্য। তাই তো, সমাজের সৌভাগ্যবানদের কাছে তাদের দাবিও অনেক।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পড়ার জন্য ডট বিন্যাসের বিশেষ মাধ্যম ব্রেইল পদ্ধতি। বাংলাদেশে খুব বেশি প্রচলিত না হলেও, এ নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কাজ করছে স্পর্শ ফাউন্ডেশন। একটু একটু করে এগিয়ে চলছে তাদের সারাদেশে ব্রেইল বই ছড়িয়ে দেয়ার কাজ।

স্পর্শ ফাউন্ডেশনের প্রধান উদ্যোক্তা নাজিয়া জাবীন জানালেন, ওরা দৃষ্টিকে জয় করেছে এজন্য আমি ওদেরকে দৃষ্টিজয়ী বলি। গত ১৫ বছরে আমাদের ৩০টি বই বেরিয়েছে। আর, এটা এ বছর আমাদের সবচেয়ে বড় প্রকাশনা। এর প্রধান কারণ আমাদের বন্ধুর সংখ্যা বেড়েছে।

এবারের বই মেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩০টি ব্রেইল বই এনেছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply