আলমগীর হোসেন:
চরম দুরাবস্থায় দেশের পুঁজিবাজার। প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজেই বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘশ্বাস। নিয়ন্ত্রক সংস্থার খামখেয়ালি সিদ্ধান্তকে দুষছেন তারা।
বিশ্লেষকদের মতে, ফ্লোর প্রাইসের কারণে বাজারে গতি আসছে না। যদিও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার বিপক্ষে। এদিকে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে, স্থিতিশীলতা আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পতন ঠেকাতে এর আগে ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়। কিন্তু এটিই এখন মূল গলার কাটা। ফ্লোর প্রাইসে আটকে লেনদেন বন্ধ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বন্ধ। ১৬৯টির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলেও তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব শেয়ারে বিনিয়োকারীরা।
এক বিনিয়োগকারী বললেন, প্রতিটি শেয়ারের দাম যদি ৭০-৮০ শতাংশ কমে যায়, তাহলে তো আমাদের করার কিছু নেই। আমাদের খুব খারাপ অবস্থা।
ফ্লোর প্রাইস ছাড়াও গেলো কয়েক মাসে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে লেনদেনে। বাজারকে স্বাভাবিক নিয়মে চলতে দেয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।
ফার্স্ট সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আল মামুন বলেন, কিছু দিন পরপর নতুন আইন প্রয়োগ করা হয়। এটা বাজারের জন্য খারাপ বার্তা। যে রেগুলেশনে আমি বিনিয়োগ করছি, সেখানে মাস দুয়েক পরে আবার নতুন রেগুলেশন আসলে সমস্যা তো হতে পারে। এ ধরনের কারণে অনেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা থেকে বিমুখ হয়ে আছে।
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীরা যদি বাজারকে ইতিবাচকভাবে না নেয় তাহলে বাজার কিন্তু ইতিবাচক হবে না। এর থেকে উত্তোরণের জন্য সরকারের পলিসি সহায়তা লাগবে।
ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে বলেও মনে করছেন তারা। কাউছার আল মামুন বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে টার্ন ওভার হচ্ছে না এখন। এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার লেনদেন যেখানে হতো, এখন সেখানে ২০০-৩০০ কোটি টাকা হচ্ছে। টাকা বের করা এবং এর পাশাপাশি টাকা ঢুকানোর রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেছে।
ছায়েদুর রহমান বলেন, বাজারকে স্বাভাবিক পরিস্থিতির ওপর ছাড়তে হবে। বাজারে উত্তান-পতন থাকে। কিন্তু আমাদের এখানে উত্তান-পতন একটু ভিন্ন রকম।
বিএসইসি বলছে, বাজারে সুশাসনের জন্য কাজ করছেন তারা। চলতি মাসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মুনাফা ঘোষণা করা হবে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বাজারে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাড়াতে কমিশন কাজ করছে। আগামীতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ আসবে আরও।
সমালোচনা থাকলেও আপাতত ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার বিষয়ে কোনো চিন্তা করছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
/এমএন
Leave a reply