রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী হওয়ার জেরে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবি সরকার মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয় গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, সরকার ইতিমধ্যে তাদের সবগুলো দাবি মেনে নিয়েছে। দাবিতে থাকা আইনগত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ছাত্রদের নিন্মোক্ত দাবিগুলো মেনে নেয়া হয়েছে–
১. শহীদ রমিজউদ্দিন স্কুলকে পাঁচটি বাস বরাদ্দ।
২. স্কুল সংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডারপাস নির্মাণের ব্যবস্থা।
৩. দেশের প্রত্যেকটি স্কুলসংলগ্ন রাস্তায় স্পীড ব্রেকার নির্মাণ।
৪. স্কুলের পাশে বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ।
৫. নিহতের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র।
৬. দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা।
৭. দ্রুত মামলা শেষ করার বিধান রেখে আইন সংশোধন।
৮. জাবালে নূরের রোড পারমিট বাতিল এবং আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফিটনেসবিহীন সকল পরিবহনের রোড পারমিট বাতিল।
৯. লাইসেন্সবিহীন ভুয়া ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ।
১০. নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে সাক্ষাত, সমবেদনা প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা।
১১. জাবালে নূর পরিবহনের মালিকের ৭ দিনের রিমান্ড।
১২. গাড়ির চালক মো. মাসুম বিল্লাহ সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।
১৩. এ ছাড়া এ মামলায় গ্রেফতার মো. এনায়েত হোসেন, মো. সোহাগ আলী, মো. রিপন হোসেন এবং মো. জোবায়ের কারাগারে রয়েছেন। আগামী ৬ আগস্ট এদের রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।
১৫. ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধে এবং মহাসড়কগুলোতেও চালকদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
গত ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষির মধ্যে একটি বাস বিমানবন্দর সড়কের এমইএস এলাকায় রাস্তার পাশে যাত্রী ছাউনির কাছে দাঁড়ানো একদল শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায়। বাসের গতি এতটাই তীব্র ছিল যে, দেয়াল ও বহুবছরের একটি বড় গাছও উপড়ে যায়।
বাসের মুখোমুখি আঘাত ও পাশ থেকে দেয়ালে চাপা পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে, ক্ষোভে ফেটে পড়ে সহপাঠিরা। সড়কে নেমে আসে তারা। বন্ধ করে দেয়া হয় রাজধানীর প্রাণ গুরুত্বপূর্ণ ভিআইপি সড়ক। ২৯ তারিখ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুরোদমে অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ।
Leave a reply