টাকার জন্য রোগী আটকে স্বজনদের মারপিটের অভিযোগ

|

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :

সাতক্ষীরায় টাকার জন্য মুমূর্ষু রোগী আটকে স্বজনদের মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে হার্ট ফাউন্ডেশনে বিরুদ্ধে। টানা ৩ ঘণ্টা রোগীকে এম্বুলেন্সে আটকে রাখার পর রোগী ও স্বজনদের উদ্ধার করে পুলিশ।

রোববার (২ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

রোগী মুক্তি বিশ্বাস (৪৫) সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানার বাউখোলা পরানপুর গ্রামের কার্তিক বিশ্বাসের ছেলে। মারপিটে নেতৃত্ব দেয়া হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজারের নাম দেবব্রত কুমার।

রোগী মুক্তি বিশ্বাসের চাচী টুম্পা বিশ্বাস জানান, ২৮ মার্চ দুপুর ১২ টার দিকে ব্রেন স্টোকজনিত কারণে রোগীকে ভর্তি করি। পাঁচ দিন হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি ছিল। রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। তবে হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার ভর্তির সময় বেড ভাড়া ১২শ’ টাকা চুক্তি থাকলেও ১৬শ’ টাকা দাবি করে।

তিনি বলেন, সকাল ১১ টায় আমারা রোগী নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে যাওয়ার জন্য এম্বুলেন্সে উঠি। তখন আমার ভাতিজা উত্তম বিশ্বাস ম্যানেজারের কাছে টাকা পরিশোধ করতে যায়। চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত টাকা দিতে না যাওয়ায় কথা কাটাকাটি করে ম্যানেজার তাকে মারপিট করে।

হামলার শিকার উত্তম বিশ্বাস জানান, আমার কাছে ম্যানেজার অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা দাবি করে। অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাদেরসহ এম্বুলেন্সে থাকা আমার দাদাকে আটকে দেয়। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা আমাকে ম্যানেজারের রুমে আটকে রেখে মারপিট করে।

হার্ট ফাউন্ডেশনের স্ত্রী চিকিৎসা নিতে আসা নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম বলেন, আমি হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম গোলমাল শুরু হয়েছে। এগিয়ে গিয়ে জানতে পারলাম এক রোগীর কাছে বেশি টাকা চাওয়ার কারণে গোলমাল শুরু হচ্ছে। পরে দেখি হাসপাতালে লোকজন রোগীর স্বজনদের মারপিট করছে। হার্ট ফাউন্ডেশনের এমন পরিবেশ দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর কখনো হার্ট ফাউন্ডেশনে আসবো না।

অভিযুক্ত হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার দেবব্রত কুমার জানান, রোগীর স্বজনরা আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে। আমরা রোগীর স্বজনদের কোনো প্রকার মারপিট করিনি।

হার্ট ফাউন্ডেশনের মালিক ডাঃ ফয়লাস আহমেদ বলেন, কোনো রোগীকে আটকে রাখা হয় না। ছাড়পত্র করার জন্য আমার বাসায় আসছিল। এ জন্য দেরি হয়েছে। রোগীর লোকজন হাসপাতালের স্টাফদের ওপর চড়াও হয়েছে তবে স্টাফরা কোনো মারপিট করেনি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খাঁন জানান, জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কলের মাধ্যমে জানতে পারি ক্লিনিকে রোগীকে আটকে রেখে টাকার জন্য স্বজনদের মারপিট করা হচ্ছে। তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। রোগীকে খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply