পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প ও এক্সপ্রেস হাইওয়ের জমির অধিগ্রহণে ভয়ঙ্কর প্রতারণা

|

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মাদারীপুরে পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্প ও এক্সপ্রেস হাইওয়ের জন্য জমির অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণে ধরা পড়েছে ভয়ঙ্কর প্রতারণা। প্রমাণ মিলেছে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার। এ ঘটনায় ২০ জন দালালের একটি তালিকাও করেছে জেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর রেল লাইন প্রকল্প ও এক্সপ্রেস হাইওয়ের জন্য অধিকৃত জমির ক্ষতিগ্রস্থ মালিকরা তিন দফায় নোটিশ পান মাদারীপুর জেলা প্রশাসন থেকে। কিন্তু, বারবার ধর্না দিয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছিলেন না তারা। অবশেষে জানা যায়, ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে শিবচরের একটি চক্র ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী হারুন ব্যাপারী বলেন, ডিসি অফিসের শাহিন ব্যাপারী এবং আরেকজন ব্যক্তি এই কারসাজির মূল। তারা টাকা নেয়ার জন্য ভুয়া কাগজ বানিয়েছিল।

অভিযুক্ত শাহিন ব্যাপারী।

এ অভিযোগে শাহীন বেপারী নামের এক দালালকে আটক করেছে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দায়ের হয় মামলা। বেরিয়ে আসে চক্রের শীর্ষ দালালদের নাম। যদিও স্বজনদের দাবি শাহীন নির্দোষ। জানা গেছে, দালাল চক্রের সহযোগী হিসেবে আছেন ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন। ধরা পড়া সহযোগীরা জানিয়েছেন তথ্য ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল।

গ্রেফতারকৃত ইউপি সদস্য সুধাংশ মণ্ডল বলেন, দালাল চক্রের হোতা নাসির কাজী। তার সাথে লোকে যোগাযোগ করতো। নাসির বিভিন্ন লোকজন নিয়ে টাকাগুলো উঠিয়েছে।

প্রধান অভিযুক্ত নাসির কাজীর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে গা ঢাকা দিয়েছে সে। আরেক অভিযুক্ত ফরিদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন টেলিফোনে। এ অবস্থায় ২০ জন দালালের একটি তালিকা করে দুদকে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ প্রসঙ্গে মাদারীপুরের সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, পদ্মা ব্রিজের রেল প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পের সাথেও জড়িত ছিল। তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করে ২০জন দালালের তালিকা তৈরি করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে জানানো হয়েছে। দুদক এই দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জেনেছি।

তবে দালালদের তালিকা হলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ। পুলিশ বলছে অভিযান চলছে। মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, জনগণের অধিকার হরণ করেছে তারা। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই মামলাটি তদন্ত করছি। এর সাথে যে-ই জড়িত থাকুক না কেনো আর তারা যতো ক্ষমতাবানই হোক না কেনো আমরা তাদেরকে কোনো ছাড় দেবো না।

তবে, জেলা প্রশাসনের অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি পুলিশ।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply