সিটি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির, কী বলছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা?

|

শরিফুল ইসলাম খান:

জাতীয় নির্বাচনের মতো সিটি নির্বাচনেও অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অটল বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে স্থানীয় রাজনীতি বিবেচনায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সাধারণত নির্বাচনমুখী। সেক্ষেত্রে আসন্ন সিটি নির্বাচনে ‘উকিল মডেলে’র প্রার্থী হলেও তা নিয়ে চিন্তিত নয় বিএনপির হাইকমান্ড। মাঠের নেতাকর্মীরাও বলছেন, বাস্তবতা বিবেচনা করেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

সভা-সমাবেশে সরকার ও ইসির বিরোধিতা করলেও, গত বছর নারায়ণগঞ্জে ও কুমিল্লা ছাড়া দেশের সব সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি। এমনকি নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই স্থানীয় সরকারের অন্য নির্বাচনেও প্রার্থী দিয়েছে দলটি।

বিএনপি নেতারা প্রায়ই বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও ৩০টি আসন পাবে না ক্ষমতাসীনরা। তাদের দাবি, জনসমর্থনও সবচেয়ে বেশি বিএনপির। তাহলেও এবারের সিটি নির্বাচনে কেনো অংশ নিচ্ছে না দলটি।

এ নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়ে গেছি, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, জনগণের ভোটের কোনো মূল্য থাকবে না। তারা ভোট দেবে একজনকে, অথচ ফলাফল আসবে ভিন্ন। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো মানে হয় না।

বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেন, জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এমনকি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনও তারা নিয়ে যায়। নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। তাহলে কীসের নির্বাচনে যাবো আমরা?

কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত সিটি নেতারাও। বশিকের সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সারওয়ার বলেন, আমরা একটা বড় সমস্যার সমাধান করতে চাই। আমরা দেশে ন্যায় বিচার, সুশাসন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তার আগে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

একই মত দিলেন রাসিকের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে যদি আমরা নির্বাচন করি, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা নেই। এখানে ভোটের পরিবেশ নেই। মরা মানুষরাও ভোট দিচ্ছে।

বাস্তবতা হলো সিটি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তে কিছুটা দোটানায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। কারণ, দলীয় প্রার্থী না থাকলে স্থানীয় রাজনীতির সমীকরণে অন্য কারো পক্ষে কাজ করতে হয় কোনো কোনো নেতাকর্মীকে। দুশ্চিন্তা আছে উকিল মডেলের প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করা নিয়েও।

তবে উকিল মডেলকে সরকারের ষড়যন্ত্রের মডেল আখ্যা দিয়ে অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান জানান, এটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমরা ওই মডেলকে চিন্তাও করছি না। এমন যদি দু-একজন দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে আমার দলই তা প্রতিরোধ করবে। দলের প্রতিরোধের মুখে তাদের কোনো অবস্থান থাকবে না।

ড. আব্দুল মঈন খান বললেন, যারা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে তারা বিএনপিতে থাকবে। বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক, কিন্তু তা যেন কোনোভাবেই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে না হয়।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply