প্রবাসীদের জিম্মি করে বিমানবন্দরে টাকা আদায় করতো জাবেদ গ্যাং

|

অভিনব কায়দায় শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করছে একটি চক্র। কৌশলে পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ হাতিয়ে নেয়া, পুলিশ পরিচয়ে চাঁদা আদায় এবং ফ্লাইট ছাড়ার পর বিপদের কথা বলে স্বজনদের টাকা দিতে বাধ্য করে আসছে চক্রটি। তাদের অন্যতম এক হোতা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) হাতে ধরা পড়ার পর সিসিটিভি ফুটেজ ও টেলিফোন রেকর্ডে বেরিয়ে এসেছে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

গত জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুর যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে শফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী ফ্লাইট মিস করেছেন, এমন খবর তার স্বজনদের টেলিফোনে জানায় চক্রটি। নতুন করে টিকিট কেটে সরাসরি ফ্লাইটে পাঠাতে হলে দ্রুত ৬৮ হাজার টাকা লাগবে বলে শফিকুলের কন্ঠ নকল করে কান্নাকাটি করে চক্রের এক সদস্য।

আর ফোনে কান্নাকাটি শুনে বিশ্বাস করে স্বজনরাও। বিকাশ ও নগদ একাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর পরই নম্বরটি বন্ধ করে দেয় প্রতারকরা। ততক্ষণে শফিকুল বিমানে উড়ার পর তার ফোন এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায়। ধরা পড়া প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা জাবেদ নিজেই স্বীকার করেছে ফোন করার বিষয়টি।

জাবেদ ও সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রবাসীদের কখনও ডলার ভাঙানোর কথা বলে, কখনও বিমানবন্দরের কর্মকর্তা পরিচয়ে পাসপোর্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ট্রাভেল ডকুমেন্ট হাতিয়ে নিয়ে; এমনকি পুলিশ পরিচয়ে হুমকি দিয়েও চাঁদা আদায় করতো।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, মূলত কণ্ঠ নকল করে কান্নাকাটি করে ভুক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে প্রতারক জাবেদ। আর কান্না শুনেই তা বিশ্বাস করে। টাকা পেলে গাজীপুরের জাবেদ ফোন বন্ধ করে দেয়।

গাজীপুর সদরের বাসিন্দা জাবেদ এক সময় চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিল বিমানবন্দরে। চাকরি চলে যাওয়ার পর নানা ধরনের প্রতারণায় নামে সে। এসব অভিযোগে এর আগেও চারবার গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে।

মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, এই কাজ সংঘবদ্ধভাবে করার জন্য জাবেদ একটি গ্যাং তৈরি করেছে। যেটিকে জাবেদ গ্যাং বলে অভিহিত করা হয়। এই গ্যাং-এ ৫-৬ জন সদস্য রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজা-ও হয়।

প্রতারণার মাধ্যমে শফিকুলের স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এপিবিএন এর কর্মকর্তারা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply