স্টাফ করেসপনডেন্ট, টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে সদ্য প্রয়াত এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নারী ইউএনও কর্তৃক গার্ড অব অনার (রাষ্ট্রীয় সম্মান) দেয়ায় আপত্তি জানিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম)।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খান ওরফে নয়া মুন্সিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম গার্ড অব অনার দিতে গেলে আপত্তি জানান কাদের সিদ্দিকী। এ সময় পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। কাদের সিদ্দিকীর আপত্তিতে ইউএনও ফারজানা আলম পুলিশের দল নিয়ে মরদেহের পাশ থেকে সরে গিয়ে মাঠের অন্য পাশে দাঁড়ান। তখন কাদের সিদ্দিকী রাগ করে চলে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা অনুরোধ করে তাকে ফেরান।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
পরে জানাজা পূর্ববর্তী বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, পুলিশের গার্ড অব অনার দেয়া নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত। মধ্যরাতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলেন, বেলা দুইটার সময়ও একজন ম্যাজিস্ট্রেট রাখা হলো না। আজকে যদি বঙ্গবন্ধু থাকতেন তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে ঢাকা পাঠাতে পারতাম।
তিনি আরও বলেন, মেয়ে মানুষ যতো বড়ই হোক, পুরুষের সঙ্গে জানাজায় শামিল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইউএনও সাহেব খুব ভালো মানুষ বলে শুনেছি, তার মর্যাদায় হয়তো লেগেছে। আমার মেয়ের বয়সও তার চাইতে বেশি হবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করার কারণে আগামীকালের মধ্যেই যেন এই ইউএনওকে এখান থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, জানি না কি হবে, তবে মৃতদেহের সঙ্গে বেয়াদবি করা একজন মুসলমান হিসেবে আমি মেনে নিতে পারি না। শরীয়ত মেনেই মুসলমানদের চলতে হবে। শরীয়ত কোনোভাবেই জানাজায় একজন নারীর অংশগ্রহণকে সমর্থন করে না। ইউএনও সাহেব বলেছেন, এটা জানাজা নয়, গার্ড অব অনার। কোনো মহিলার গার্ড অব অনার দেয়ারও সুযোগ নাই। আমি মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশি সম্মান করি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে কাদের সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খান মারা যান। শনিবার যোহরের নামাজের পর সখীপুর পিএম পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে তার জানাজা নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়।
জানাজা শেষে ইউএনও ফারজানা আলম ওই মুক্তিযোদ্ধার মরদেহের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান (গার্ড অব অনার) প্রদর্শন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ফারজানা আলম বলেন, জানাজার নামাজ ও গার্ড অব অনার দুইটি ভিন্ন বিষয়। উনি হয়তো ধর্মীয় অনুভূতি থেকে বলতে চেয়েছিলেন, মহিলারা গার্ড অব অনার দিতে পারবেন না। আমার ধারণা, উনি জানাজার সঙ্গে গার্ড অব অনারকে মিলিয়ে ফেলেছেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের নির্দেশনা ছিল গার্ড অব অনার দেয়ার, না দিলে আমরা যেনো চলে যাই। কিন্তু পরে উপস্থিত স্থানীয়দের অনুরোধে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দিয়েই আমরা চলে আসি।
/এসএইচ/এমএন
Leave a reply