পিটিআই চেয়ারপারসন ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারকে অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিক্ষোভ-সহিংসতা চলে পাকিস্তানজুড়ে। গত তিনদিনের সহিংসতায় প্রাণ গেছে অন্তত ৮ জনের, আহত ৩ শতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ধরপাকড় চালায় প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয়, পিটিআইয়ের সিনিয়র নেতা শাহ মেহমুদ কোরেশি, ফাওয়াদ চৌধুরীসহ অনেককেই। খবর জিও নিউজের।
গতকাল বুধবার (১০ মে) পেশোয়ারে রেডিও পাকিস্তানের ভবন জ্বালানোর একটি ভিডিও প্রচার করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম- পিটিভি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষুব্ধ পিটিআই সমর্থকরা প্রথমে ভাঙচুর চালায়। এরপর, স্পর্শকাতর ওই ভবনটিতে অগ্নিসংযোগও করে তারা। শুধু তাই নয়, পাঞ্জাবের ১৪টি সরকারি ভবন এবং ২১টি গাড়িতেও আগুন দিয়েছেন, ক্ষুব্ধ সমর্থকরা।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই রাজধানী ইসলামাবাদেও নেয়া হতে পারে কঠোর পদক্ষেপ। তাছাড়া, গিলগিট-বেলুচিস্তানে এক মাসের জন্য জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। তবুও, কমছে না অসন্তোষ।
পিটিআই সমর্থকরা বলছেন, লাহোর কেন্দ্রীয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই নেয়া হয়েছে বহু মানুষকে। গুলিবিদ্ধ অথবা গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন অন্তত ৭৭ জন। এছাড়া, তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। এখনও চারপাশে চলছে গোলাগুলি আর বোমা বর্ষণ। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাতেই রাস্তায় বের হয়েছিলাম। কিন্তু, পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ার অজুহাতে গুলিবর্ষণ করছে। যে দেশে, ইমরান খান ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। সেখানে, সাধারণ মানুষের কী হাল হবে- তা বোঝাই যাচ্ছে। তাকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এদিকে, মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর শাহবাজ শরিফের হুমকি- নাশকতাকারীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ কঠোর উদ্যোগ নেবে তার সরকার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, রাস্তাঘাটে চলন্ত গাড়ি থেকে নামিয়ে যাত্রীদের পেটাচ্ছে পিটিআই কর্মীরা। এমনকি, অ্যাম্বুলেন্সও ছাড়ছে না। রোগী-স্ট্রেচারসহ নামিয়ে করছে অগ্নিসংযোগ। যেসব অপরাধী আইন নিজের হাতে নিচ্ছে; তাদেরকে অবশ্যই শক্ত হাতে দমন করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী কঠোর শাস্তি পাবে তারা।
এদিকে, বুধবার ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসে বসানো বিশেষ আদালতে তোলা হয় ইমরান খানকে। দুর্নীতি দমন বিভাগের আপিলের প্রেক্ষিতে মঞ্জুর করা হয় ৮ দিনের রিমান্ড। সে সময়, আইনজীবীর কাছে তিনি দেন জনতার প্রতি বার্তা।
ইমরান খানের আইনজীবী শের আফজাল মারওয়াত বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ- তাকে সারারাত সজাগ রাখা হয়েছে। কিন্তু, তার সাথে কোনো অসদাচরণ করেনি দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তারা। রাত ৩টায় তাকে সরানো হয় পুলিশ লাইনসে। বিছানা ছাড়া নোংরা কক্ষে রাখা হয়েছে ইমরানকে। এমনকি, আমার সাথে কথা বলার সময়ও দেয়া হয়নি খাবার। জনতার প্রতি তার একটাই বার্তা- দেশে মার্শাল ল’ জারি হলে; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় রুখে দাঁড়াবেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে; আইনজীবীর কক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে আটক করা হয় ইমরান খানকে। পরে, পুলিশ ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
/এসএইচ
Leave a reply