আবাসিকে গ্যাসের দাম এক লাফে ৪৩ শতাংশ বাড়াতে চায় তিতাস!

|

মাহফুজ মিশু:

এক লাফে আবাসিকে গ্যাসের দাম ৪৩ শতাংশ বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে তিতাস। প্রস্তাব অনুযায়ী দুই চুলায় ৫১২ ও এক চুলায় বাড়বে ৩৮৯ টাকা। তিতাসের দাবি, মিটারবিহীন গ্রাহকরা ৪৭ শতাংশ গ্যাস বেশি ব্যবহার করছেন। এটাকে অযৌক্তিক ও অবাস্তব উল্লেখ করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখনও ব্যবহারের চেয়ে বেশি গ্যাসের দাম দিচ্ছে গ্রাহকরা। এদিকে, বিশ্ববাজারের সাথে মিল রেখে প্রতিমাসে জ্বালানির দাম নির্ধারণের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রান্নাবান্নার কাজে বাসাবাড়িতে পাইপ লাইনের গ্যাস ব্যবহার করেন তিতাসের সাড়ে ২৮ লাখের মতো গ্রাহক। এদের ৩ লাখ ৩২ হাজার প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন। বাকি ২৫ লাখের বেশি গ্রাহক এখনও বিল দেন মাস শেষে। এক চুলায় ৫৫ ও দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার গ্যাস খরচ হয় ধরে বর্তমান বিল নির্ধারিত। হঠাৎ করে তিতাস বলছে, এক চুলায় ৭৬ ও দুই চুলায় নাকি খরচ হচ্ছে ৮৮ ঘনমিটার গ্যাস। সেই হিসেবে এক চুলার বিল ৯৯০ থেকে ১৩৭৯ আর দুই চুলার জন্য ১০৮০ টাকার বদলে গুনতে হতে পারে ১ হাজার ৫৯২ টাকা। তবে, বাসাবাড়িতে এই পরিমাণ গ্যাস পোড়ানোর তথ্য অবাস্তব বলছেন, বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, তখন যেটা ধরা হতো ৬০ ইউনিট গ্যাস আমরা ব্যবহার করি সেটা তার চেয়ে কম। ৪০ ইউনিটের কথা তারা বলেছে। এখন এই ৬০ ইউনিট থেকে যদি তারা গ্যাসের ব্যবহার ৮৮ ইউনিটে নিয়ে যায়, তা গ্রহণযোগ্য না। এবং তার উপর ভিত্তি করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এ ধরনের কারিগরিভাবে ভুল প্রস্তাব দেয়াটাই অনুচিত।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসিকে বাদ দিয়ে কয়েক দফা নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। তবে তিতাসের প্রস্তাব কমিশন পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে। গ্যাসসহ জ্বালানির মূল্যে সরকার ভর্তুকি দেবে না জানিয়ে দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে জ্বালানি বিভাগও।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্যাসের দামের সামঞ্জস্য করবো ব্র্যান্ড প্রাইসের সাথে মিলিয়ে। যখন আমরা মিক্স করি, তখন একটি মূল্য দাঁড়ায়। সেই ব্লেন্ডিং প্রাইস আমরা প্রতি মাসেই অ্যাডজাস্ট করবো। জ্বালানি এবং বিদ্যুতের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী আমাদের দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্ধারণ হওয়া উচিত।

জ্বালানির দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই করতে চায় সরকার। নির্বাচনের আগে সেই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হচ্ছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই পদ্ধতির জন্য একটি নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হবে।

দুই চুলার প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের গড় খরচ মাসে ৬০০ টাকার মতো। তার মানে, এখনই প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ টাকার মত বেশি বিল দিচ্ছেন মিটারবিহীন গ্রাহকরা।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply