সিনিয়র করেসপনডেন্ট, সিরাজগঞ্জ:
আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে রাজি হয়েছেন ৩ শতাধিক চরমপন্থী। রোববার (২১ মে) দুই শতাধিক অস্ত্র জমা দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানা গেছে। শনিবার (২০ মে) র্যাব-১২ কর্তৃক পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রায় দুই দশক ধরে চরমপন্থীদের দমনে কাজ করছে র্যাব। বন্দুক যুদ্ধে শীর্ষ কয়েক নেতার মৃত্যু হলেও থেমে থাকেনি তাদের কর্মকাণ্ড। ২০২০ সালে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনপদকে চরমপন্থীদের আগ্রাসন থেকে রক্ষায় তাদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। র্যাবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা বেশ কয়েকটি সক্রিয় দলের নেতা প্রায় ৩ শতাধিক সদস্য ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের সম্মতি জানিয়েছে।
জানা গেছে, ৩২৩ জনের মধ্যে পাবনা জেলার ১৮০ জন, সিরাজগঞ্জের ১১, টাঙ্গাইলের ৭৪, রাজবাড়ীর ৫৪, মেহেরপুরের ২, কুষ্টিয়া ও বগুড়ার ১ জন চরমপন্থি রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় র্যাব-১২ সদর দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন তারা। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
র্যাব আরও জানায়, ‘উদয়ের পথে’ নামে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে চরমপন্থী পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চরমপন্থী পরিবারের ৩০ জন নারী সদস্যকে স্বাবলম্বী করতে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও মাছ চাষ, গরু বা মুরগীর খামার, রিকশা, সেলাই মেশিন প্রদানের মাধ্যমে চরমপন্থী নেতা ও সদস্যদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হবে।
চরমপন্থি নেতা মোহাম্মদ সাধু বলেন, র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্র জমাদানের উদ্যোগে আমরা রাজি হয়েছি। পথভ্রষ্ট হয়ে এতদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকেছি। এখন আমরা সামাজিক স্বীকৃতি চাই। আমাদের পুনর্বাসন করতে আশ্বস্ত করা হয়েছে। শ্রমিকের কাজ করে ডালভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইল। এক সময় চরমপন্থীদের অভয়ারণ্য ছিল এই ৭ জেলা। এসব এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক একটি জনপদ ছিল আতঙ্কের নাম। প্রতিদিনই চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো। মার্কস-লেলিন ও মাওবাদী আদর্শের নামে ১৪টি চরমপন্থী সংগঠন সক্রিয় ছিল এই জনপদে।
এএআর/
Leave a reply