রনি মিয়াজী, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
গত কয়েক বছরে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে বেড়েছে সুপারির চাষ। গড়ে উঠেছে ছোট বড় কয়েক হাজার সুপারি বাগান। অন্য ফসলের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে সুপারি চাষের পরিধি। বর্তমানে সাপ্তাহিক হাটগুলোতে জমে উঠেছে সুপারির বাজার। দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা।
আবহমানকাল ধরেই বাঙালিদের খাদ্যের অন্যতম অনুষঙ্গ পান-সুপারি। পানের সঙ্গে সুপারি লাগেই। এক সময় নিজেদের জন্য বাড়ির আঙিনায় সুপারির গাছ লাগালেও এখন বাণিজ্যিকভাবে এর আবাদ হচ্ছে পঞ্চগড় জেলাজুড়ে।
জেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ পতিত জমিতে, কেউ বাড়ির আঙিনায় আবার কেউ জমির সীমানা নির্ধারণ ঠিক রাখতে সারি সারি করে লাগিয়েছেন সুপারি গাছ। কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে চা শিল্প বিপ্লবে মিশ্র চাষ হিসেবে চা বাগানে সুপারি গাছ লাগিয়েছেন চাষিরা। চৈত্র-বৈশাখ মাসে গাছ থেকে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। ফলে গত কয়েক বছরে গড়ে উঠেছে ছোট বড় হাজারো সুপারির বাগান। বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে সুপারির চাষাবাদ। সাপ্তাহিক হাটগুলোতে শুরু হয়েছে সুপারির আমদানি। ছোট বড় কাঁচা পাকা সুপারিতে ভরে উঠেছে হাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বড় ব্যবসায়ীরা তুলনামূলক কম দামে সুপারি কিনতে আসছেন পঞ্চগড়ে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি পণ সুপারি আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এখান থেকে ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে পাঠান রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
সুপারি চাষিরা জানান, এক বিঘা জমিতে ৩০০ থেকে ৪০০ সুপারি গাছ লাগানো যায়। জমি ও চারা রোপণ করতেই কেবল খরচ হয়। আর প্রতি বছর অল্প সার ও পরিচর্যা করলেই ভাল ফলন পাওয়া যায়। চারা রোপণের তিন বছর পর থেকেই ফল ধরতে শুরু করে গাছে। প্রতি বিঘা সুপারির বাগান থেকে প্রতি বছর লাখ টাকার ফলন পাওয়া যায়। বাগানের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফলনও বাড়ে। এবার ভালো দাম পাওয়ায় খুশি বাগান মালিকরা। তবে আরও কিছু দাম বেশি প্রত্যাশা তাদের।
কৃষকরা জানান, সুপারি বাগানে সাথী ফসল হিসেবে এখন চা, চুই-ঝাল, পান, লটকন ও আদাসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা যায়। তাই একই জমি থেকে সাথী ফসলেও আসছে টাকা।
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক শাহ আলম মিয়া জানান, এবার জেলার পাঁচ উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে সুপারি।
এএআর/
Leave a reply