আল আমিন সিকদার:
পুলিশের জালে অবশেষে ধরা পড়লেন চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ অপরাধী ‘গ্রিন মামা’। নামে গণপরিবহনের লাইনম্যান হলেও আড়ালে চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা তিনি। সড়কে পুলিশ আছে কিনা ছিনতাইকারীদের সেই সিগন্যাল দেন ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে। তাকে ধরতে ছদ্মবেশে রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগরীর চৌমুহনী মোড়ে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা আধঘণ্টা নজরদারির পর আটক করেন গণপরিবহনের লাইনম্যান জাহাঙ্গীরকে। ভোরে নির্জন সড়কে বা আশপাশে পুলিশ নেই, সেই গ্রিন সিগন্যাল দিতেন ছিনতাইকারীদের। আর এজন্য ছিনতাইকারীরা জাহাঙ্গীরকে ‘গ্রিন মামা’ নামে চেনে।
এ নিয়ে সিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) আরিফুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীরের মূলত কোনো কাজ নেই। সারাদিন চায়ের দোকানে বসে থাকে, আর রাস্তায় পুলিশ আছে কিনা সেই তথ্য সরবরাহ করে ছিনতাইকারীদের।
আটকের আধঘণ্টা আগেও যথারীতি গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। সে অনুযায়ী ছিনতাইকারীরা লোকাল বাসে উঠে ৮টি মোবাইল ফোনও হাতিয়ে নেয়। ভুক্তভোগী যাত্রীরা বলেন, ৮-১০ জন নিজেরা হট্টোগোল করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তাকেই চোর চিহ্নিত করে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয় বা সেই স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে, ‘গ্রিন মামা’কে নিয়ে অভিযানের একপর্যায়ে ১১ সদস্যের তুষার গ্রুপের সন্ধান পায় পুলিশের অভিযান দলটি। রিকশা নিয়ে টার্গেট খুঁজছিল চক্রটি। হঠাৎ পুলিশের নজরদারি আঁচ করতে পেরে পালিয়ে যায় তুষারসহ ৮ ছিনতাইকারী। তাদের মধ্যে থেকে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। চক্রটির টার্গেট মূলত লোকাল বাসের যাত্রীরা। ছিনতাইয়ের নতুন নতুন সব কৌশল বের করেন তারা।
এ নিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) আরিফুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে সকালে যখন মানুষ অফিসে যায়, এরা নিজেই ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠে। এ সময়ের মধ্যে কখন তারা মানুষের মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনতাই করে নেয় তা কেউ টের পায় না।
ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির এমন আরও অন্তত: অর্ধশত গ্রুপ সক্রিয় চট্টগ্রামে। একে এতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।
এসজেড/
Leave a reply