বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোলরক্ষক মোহাম্মদ মহসিন। গোলপোস্টের নিচে তিনি ছিলেন অতন্দ্রপ্রহরী। বাঘা বাঘা ফরোয়ার্ডদের আক্রমণ রুখেছেন দৃঢ়হস্তে। সেই হাতই এখন অনেকটাই নিস্তেজ। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুপথযাত্রী এক সময়ের স্টাইলিশ এ ফুটবলার। কোনো কিছুই মনে রাখতে পারছেন না। একই কথা বলছেন বারবার। অর্থাভাবে করাতে পারছেন না চিকিৎসা।
দেশের জনপ্রিয় এই গোলরক্ষক ১৯৯৫ সালে খেলা ছেড়ে দেয়ার দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্র হয়ে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এলেও মা অসুস্থ থাকার কারণে কানাডা থেকে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসেন ২০১৪ সালে। তার আগেই কানাডায় মহসিনের সংসার ভেঙে যায়। সাবেক এই তারকা গোলরক্ষকের ছোট ভাই কোহিনুর পিন্টু বলেন, ২০১৩ সালে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় মহসিনের।
কোহিনূর ইসলাম পিন্টু বলেন, ২০১৩ সালে স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর মহসিন ভাই কানাডা থেকে দেশে ফিরে আসেন। খেলোয়াড়ি জীবনে যে টাকা উপার্জন করেছিলেন তা দিয়ে সাভারে জমি-জমা কিনেছিলেন। সাভারের ইমাদিপুর পাকিজা শাড়ির ফ্যাক্টরির লাগোয়া দুই বিঘার বেশি জায়গা ছিল আমাদের। কিন্তু সেগুলোও এখন দুর্বৃত্তদের দখলে। কানাডায় থাকাকালীন অর্থকড়ি যা জমিয়েছিলেন তার প্রায় পুরোটাই রেখে দিয়েছেন তার স্ত্রী। যে কারণে তাকে ঢাকায় ফিরতে হয়েছিল শূন্য হাতে।
পিন্টু আরও জানান, মহসিনের ডান হাতের বুড়ো আঙুল বাঁকা হয়ে গেছে। দুই চোখে অপারেশন করাতে হয়েছে। সহায় সম্বলহীন অবস্থায় কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। পিন্টুর কথায়, এখন ভাইয়ের শরীরটা দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। স্মৃতি প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন। পরিবারের কাউকে কাউকে ছাড়া অন্যদের চিনতে পারছে না। সবকিছু ভুলে যাচ্ছেন। ভাত খাওয়ার পর বলে ওঠেন, কই খেয়েছেন! দরজা খোলা পেলে বাইরে চলে যান তিনি। কিছুই মনে রাখতে পারছে না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে পিন্টু বলেন, আমার ভাই বাঁচতে চান। তাকে বাঁচানোর জন্য দেশের ক্রীড়া প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি।
কোনো কিছুই মনে রাখতে পারছেন না এই গোলরক্ষক। একই কথা বলছেন বারবার। দ্রুত চিকিৎসা না হলে হয়তো এই নক্ষত্র দ্রুতই হয়ে যাবেন আকাশের নক্ষত্র।
/আরআইএম/এম ই
Leave a reply