মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারের অর্থনৈতিক নীতিকে সমর্থন দিয়ে তৈরি করা হয় মুদ্রানীতি। এর নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা নেই। তাই গতানুগতিক মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে বেসরকারি খাতে বিশেষ করে এসএমইতে ঋণ প্রবাহ বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন তারা।
রোববার (১৮ জুন) নতুন অর্থবছরের জন্যে এই নীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর।
মূল্যস্ফীতি, বিনিময় হারে অস্থিরতা, চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র খুলতে না পারা, জ্বালানি সংকটে ব্যাহত উৎপাদন, বেসরকারি বিনিয়োগে মন্দাবস্থা, চাপের মুখে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এমন নানামুখী সংকটে দেশের অর্থনীতি। সাথে আছে আইএমএফ’র শর্ত পরিপালনের তাগিদ।
এসব বাস্তবতার মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা করতে যাচ্ছে নতুন মুদ্রানীতি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এবারের মুদ্রানীতি প্রণয়ন বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কী পদক্ষেপ নেয়া হয় সেটিই দেখার বিষয়। যদিও তারা মনে করেন, আইএমএফ’র শর্ত বাস্তবায়নের কিছুটা প্রতিফলন থাকলেও বাকিটা হবে বাজেটকে সহায়তা করা।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই মূল্যস্ফীতির সময় সুদের হার কিছুটা বাড়িয়ে খানিকটা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব। এরপর বাজেট ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দিয়ে দেখতে হবে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যায় কিনা।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারে ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কাজেই সেটাও আমরা আগ্রহ সহকারে দেখব যে এই মনিটারি পলিসিতে কী ইন্ডিকেশন হয়।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সহজ শর্তে ঋণ দেয়া প্রয়োজন। এ জন্য মুদ্রানীতিতে উদ্যোগ থাকা দরকার। সরকারি ঋণের বিষয়েও দিক নির্দেশনা থাকতে হবে মুদ্রানীতিতে। তবে নির্বাচনের বছরে সুদের হার এবং বিনিময় ব্যবস্থা কতটা বাজারভিত্তিক করা সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় আছে অর্থনীতিবিদদের।
আইএমএফ শর্ত পূরণে আর্থিক খাতের সংস্কারের পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। এ জন্য মুদ্রানীতির চেয়ে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
এটিএম/
Leave a reply