অবশেষে হাইকোর্টের আদেশে কার্যালয়ে বসলেন সাতক্ষীরার সেই পৌর মেয়র

|

মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা মেয়রের কক্ষে বসেন পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ও পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :

উচ্চ আদালতের আদেশ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পত্রের পর দায়িত্ব বুঝে পেলেন সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী। মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুর আড়াইটায় পৌরসভার মেয়রের কক্ষে বসেন তিনি। এর আগে বেলা ১১টায় পৌর কার্যালয়ে আসলেও তার কক্ষটি তালাবদ্ধ থাকায় ফিরে যান মেয়র।

মঙ্গলবার (২০ জুন) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের আদেশের মূলে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ, কারণ দর্শানোর নোটিশ ও প্যানেল মেয়র-১ কে পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বপ্রদান সম্পর্কিত আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে মর্মে নির্দেশক্রমে অবহিত করা হলো। এই চিঠি দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরকে।

এদিকে মন্ত্রণালয়ের আদেশের পর ২১ জুন সকালে সাতক্ষীরা পৌরসভা কার্যালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করেন সিইও নাজিম উদ্দীন। সেখানে বলা হয়, বেলা আড়াইটায় ভারপ্রাপ্ত মেয়রের উপস্থিতিতে মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীকে পৌরসভার নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিস্ট্রার ও সীলমোহর হস্তান্তর করা হবে।

বেলা আড়াইটার দিকে পৌর কার্যালয়ে উপস্থিত হন মেয়রসহ পৌর কাউন্সিলরগণ। সেখানে সিইও দায়িত্বভার গ্রহণের একটি পত্র মেয়রের সামনে তুলে ধরেন। তবে সেই পত্রে স্বাক্ষর করেননি মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী। এ সময় সিইও নাজিম উদ্দীন বলেন, মেয়র দায়িত্বভার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিষয়টি তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন বলে চেয়ার ছেড়ে কক্ষ ত্যাগ করেন।

সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, মন্ত্রণালয়ের আদেশের পর তিনি নতুন কোন চিঠি ইস্যু করতে পারেন না। তিনি ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলকে বিভ্রান্ত করছেন। বিষয়টি আমি উচ্চ আদালতকে অবহিত করবো। উচ্চ আদালতের আদেশে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব স্বাক্ষরিত পত্রের পর আমি কার্যালয়ে আমার দায়িত্ব বুঝে পেয়েছি। আমি জনগণের সেবা দিতে মেয়র পদের যে কার্যক্রম সেটি পালন করবো। এতে কোনো বাধা নেই।

এ সময় মেয়র বলেন, পৌরসভার সিইও নাজিম উদ্দীন সাতক্ষীরা পৌরসভায় আবারও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান। ইতিপূর্বেও সেটি করেছেন বর্তমানেও চলমান রাখার পায়তারা করছেন। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

প্যানেল মেয়র-১ কাজী ফিরোজ হাসান জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছিলাম। সেই দায়িত্ব মেয়র চিশতীকে আমি বুঝিয়ে দিয়েছি। জনগণের সেবা দেয়ার জন্যই আমরা নির্বাচিত হয়েছি। একসঙ্গে মিলে আমরা জনগণের সেবা করবো।

উল্লেখ্য, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব পৌর মেয়র চিশতী ২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি নাশকতার মামলায় কারাগারে যান। সেই কারণে ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একইসাথে প্যানেল মেয়র-১ কাজী ফিরোজ হাসানকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব বুঝে নিতে বলা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি চিশতী জামিনে মুক্ত হবার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বিত হাইকোর্ট ডিভিশনের দ্বৈত বেঞ্চ এক আদেশে চিশতীর বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় দায়িত্ব বুঝে নিতে গেলে পৌরসভায় লাঞ্ছিত হন মেয়র চিশতী। তখন তিনি স্বপদে বহাল হতে পারেননি। এরপর গত ১৯ জুন (সোমবার) সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর কাছে সকল ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply