আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
সাড়া পড়েনি মালয়েশিয়ার প্রিমিয়াম ভিসায়, আবেদন বেড়েছে সেকেন্ড হোমে। মাই সেকেন্ড হোম (এমএমটুএইচ) প্রোগ্রামে দেশটির সরকার কঠোর শর্ত প্রয়োগ করা সত্ত্বেও আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার (২২ জুন) পুত্রজায়ায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানিয়েছেন।
দেশটির সেকেন্ড হোম ক্যাটাগরিতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০টি আবেদন জমা পড়েছে। এর আগে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আবেদনকারী ছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ফ্রি মালয়েশিয়া টুডেসহ কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, মোট সেকেন্ড হোম আবেদনকারীদের মধ্যে ৮০০ জন আবেদনকারীকে প্রাক-অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে কতজন বাংলাদেশির আবেদন অনুমোদন হয়েছে তা জানানো হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, (এমএমটুএইচ) প্রোগ্রামে সরকার আরও কঠোর শর্ত প্রয়োগ করার পরও যুক্তরাজ্য, জাপান এবং সিঙ্গাপুর থেকে আরও বেশি আবেদনকারী অংশ নিয়েছেন এবং তাদের আবেদনগুলি এখনো পুলিশ দ্বারা যাচাই করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম (এমএমটুএইচ) প্রোগ্রামে ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৬১০টি এবং ২০১৯ সালে ৩ হাজার ৯২৯টি আবেদন অনুমোদিত হয়েছে। যদিও এই প্রোগ্রামটি ২০২০ সালে সাময়িক বন্ধ করা হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে প্রায় ১ হাজার ৪৬৮টি আবেদন অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
এদিকে, সেকেন্ড হোম ক্যাটাগরির নানা আলোচনা ও সমালোচনার পর গত বছরের অক্টোবরে মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে পিভিআইপি নামক প্রিমিয়াম ভিসা চালু করে। যেটি প্রায় সেকেন্ড হোম ক্যাটাগরির কিন্তু এ প্রোগ্রামে লক্ষ্যপূরণ করতে না পারলেও প্রোগ্রামটি বাতিল না করে পিভিআইপি’র লক্ষ্য পূরণে আরও অধিকতর পর্যালোচনা করার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
জানা গেছে, প্রিমিয়াম ভিসা প্রোগ্রামের আওতায় ৯ মাসে মাত্র ২টি আবেদন অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়ান সরকার। গত বছরের ১ অক্টোবর আবেদনকারীদের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ প্রিমিয়াম ভিসা প্রোগ্রামে মাত্র ২৮টি আবেদন পেয়েছে। ২৮টি আবেদনের মধ্যে ১৪ জন পার্টিসিপেন্ট এবং ১৪ জন ডিপেন্ডেন্ট। এর মধ্যে একজন পার্টিসিপেন্ট এবং একজন ডিপেন্ডেন্ট আবেদনকারীকে প্রিমিয়াম ভিসার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। তিনি জানিয়েছেন, প্রোগ্রামটি বাতিল না করে প্রিমিয়াম ভিসার লক্ষ্য পূরণে পর্যালোচনা করা হবে।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ার সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এমন দেশগুলো ছাড়া সব বিদেশি ধনী বিনিয়োগকারীদের বসতি স্থাপনের আশায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে (পিভিআইপি) প্রোগ্রামের ঘোষণা করা হয়। এছাড়া প্রিমিয়াম ভিসা প্রোগ্রামের (পিভিআইপি) অধীনে ভিসাপ্রত্যাশী বিদেশিদের আবেদন প্রক্রিয়া পরিচালনায় দেশটির ১৬টি এজেন্সিকে অনুমতি দিয়েছিল মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন বিভাগ। এজেন্টদের তালিকা ইমিগ্রেশন বিভাগের ওয়েবসাইট (https://www.imi.gov.my/) ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শর্ত, আবেদন প্রক্রিয়া, এজেন্সি অনুমোদনসহ প্রিমিয়াম ভিসা কর্মসূচির বিস্তারিত সে সময় তুলে ধরেন মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন অধিদফতরের মহাপরিচালক (সাবেক) খায়রুল জায়মি দাউদ।
ভিসা আবেদনকারীদের অবশ্যই মালয়েশিয়ায় ১০ লাখ রিঙ্গিতের (বাংলাদেশি মুদ্রা প্রায় ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা) একটি স্থায়ী আমানত অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং প্রধান আবেদনকারীর জন্য এককালীন ২ লাখ রিঙ্গিত এবং ডিপেডেন্টের জন্য এককালীন ১ লাখ রিঙ্গিত ফি দিতে হবে। এছাড়া আবেদনকারীদের সংখ্যা মালয়েশিয়ার জনসংখ্যার ১ শতাংশে সীমিত রাখা হবে বলেও সেসময় জানানো হয়।
ইউএইচ/
Leave a reply