ওয়াগনারের বিদ্রোহে পুতিনের শাসনব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বিশ্লেষকদের মত

|

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ সামাল দেয়ার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দক্ষ ও চৌকশ নেতৃত্বের দৃঢ়তা আরও একবার সামনে এলো। অনেক বিশ্লেষক এমনটাই মনে করছেন।

পুতিনের নড়বড়ে শাসন ব্যবস্থা কিংবা মানসিকভাবে দুর্বল ও বিচলিত হয়ে পড়ার বিশ্লেষণ অনেকটা উড়িয়েই দিচ্ছেন এসব বিশ্লেষক। বরং এর মধ্য দিয়ে তার শাসনব্যবস্থা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলেও মত তাদের। খবর রয়টার্সের।

দুই দশকেরও বেশি সময়ের শাসনামলে পুতিন তার কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন মাত্র কয়েকদিন আগেই। ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের প্রকাশ্য বিদ্রোহে নড়েচড়ে বসে গোটা বিশ্ব।

ওয়াগনারের বিদ্রোহ দেখে অনেকেই বলছেন, এর মধ্য দিয়ে সামনে এসেছে পুতিনের নড়বড়ে শাসন ব্যবস্থার চিত্র। এমনকি এ ঘটনার পর রাশিয়ায় তার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব টিকে থাকবে কি না তা নিয়েও উঠে প্রশ্ন।

বিদ্রোহ নিয়ে যখন বিশ্বব্যাপী নানা জল্পনা চলছে, ঠিক এর মাঝেই ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই অবসান ঘটে ওয়াগনার প্রধানের বিদ্রোহের। প্রিগোঝিনের সাথে সমঝোতাকে অনেকেই আখ্যা দেন পুতিনের পরাজয় হিসেবে। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন অনেক বিশ্লেষক। একে তার চৌকশ ও দক্ষ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিচ্ছেন তারা।

লন্ডনের কিংস কলেজের সম্মানীয় রিসার্চ ফেলো ড. মেরিনা মিরোন বলেন, পুতিন খুব ভালোভাবেই জানেন, কখন কোন কাজটা করতে হবে। পর্দার আড়ালে থেকেই যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম তিনি। এই ঘটনার মধ্যমে তার শাসনের কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আমি মনে করি না। প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সাথে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। বিশেষ করে যারা প্রকৃত অর্থেই পুতিনকে সমর্থন করেন, তারা প্রিগোঝিনের দৃষ্টান্তমূলক পরিণতি দেখতে চাইবেন। তবে আমার ধারণা, এই মুহুর্তে পরিস্থিতি শান্ত করার দিকেই পুতিন সবচেয়ে বেশি মনোযোগী।

বিদ্রোহের পর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। গুঞ্জন উঠছে, সের্গেই শোইগুর নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে পারেন পুতিন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজ স্বার্থ বিবেচনায় এক্ষেত্রেও ধীরস্থিরভাবেই সিদ্ধান্ত নেবেন ভ্লাদিমির পুতিন।

ড. মেরিনা মিরোন বলেন, প্রিগোঝিনের বিদ্রোহ পুতিনের জন্য প্রতিরক্ষা খাতকে ঢেলে সাজানোর বার্তা। সের্গেই শোইগুর চেয়ে আরও বেশি সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কাউকে নিয়োগ করা প্রয়োজন। তবে একইসাথে বিশ্বাসী এবং দক্ষ আউকে খুঁজে পাওয়া পুতিনের জন্য কঠিন হবে। তাই এই মুহুর্তে শোইগুর বিকল্প কেউ নেই। আর পরিবর্তন আনলেও পুতিন যথেষ্ট সময় নিয়েই সেটা করবেন।

উল্লেখ্য, ক্ষমতায় থাকাকালে চেচনিয়া যুদ্ধ, জর্জিয়া ও ক্রাইমিয়া যুদ্ধসহ নানা সংকট সামলেছেন পুতিন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply